বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার অবহেলাই দায়ী

  09-12-2016 10:28AM

পিএনএস ডেস্ক: রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকেরই পাঁচ কর্মকর্তার অবহেলা দায়ী। এ কারণেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাইবার চুরির ঘটনা ঘটে। এমনটাই উঠে এসেছে রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ সরকারের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। এ কমিটির প্রধান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। সাবেক এই গভর্নরের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

২০১৬ সালের মে মাসে মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন-এর নেতৃত্বাধীন ওই তদন্ত কমিটি সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদন নিয়ে সংবাদমাধ্যমে এটাই তার প্রথম বিশদ মন্তব্য। রয়টার্সকে তিনি পাঁচ কর্মকর্তার কথা বললেও তাদের কারও নাম প্রকাশ করেননি।

নিজ কার্যালয়ে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘এই ব্যক্তিরা নিম্ন থেকে মধ্যম সারির কর্মকর্তা। এই অপরাধের সঙ্গে তাদের সরাসরি কোনও সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও তারা অমনোযোগী, অসতর্ক ও পরোক্ষ সহযোগী ছিলেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আলোচিত এ রিজার্ভ চুরি ঘটনায় এখনও ব্যাংকের কোনও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওই কর্মকর্তার মন্তব্যের সূত্র ধরে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করে রয়টার্স।’ তবে তিনি বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাক করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে হ্যাকাররা ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার ব্রাঞ্চের চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। এরপর ওই অর্থ পাঠানো হয় ফিলিপাইনের কয়েকটি ক্যাসিনোতে। যে অর্থ আজও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
হ্যাকাররা ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০ মিলিয়ন পাঠিয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। তবে বানান ভুলের কারণে ওই অর্থ ব্যাংক থেকে তোলা যায়নি। আর এর ফলে এই রিজার্ভ চুরি বা সাইবার ডাকাতির বিষয়টি সামনে আসে।

এ ঘটনা প্রথম জানাজানি হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে। ফিলিপাইনের দৈনিক ইনকোয়ারারে এ নিয়ে অনুসন্ধানী একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে মার্চের শুরুতে দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনায় আসে। ঘটনার দায় কাঁধে নিয়ে পদত্যাগে বাধ্য হন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন