বিপিসি ও পেট্রোবাংলার কাছে সরকারের পাওনা ৩২ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা

  30-12-2016 04:54PM

পিএনএস, এবিসিদ্দিক : বিপিসি ও পেট্রোবাংলার কাছে রাজস্ব বাবদ সরকারের পাওনা দাড়িয়েছে ৩২ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে পেট্রোবাংলার আওতাধীন চারটি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির কাছে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ এবিআরের পাওনা ৩০ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা ও বিপিসির কাছে ভ্যাট বাবদ পাওনা ২ হাজার ১৮ কোটি টাকা। চারটি গ্যাস বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান হলো- তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।

চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে সুদ ছাড়া জুলাই, ২০০৯ হতে মার্চ, ২০১৪ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৩৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ও এপ্রিল, ২০০৯ হতে ডিসেম্বর ২০১৪ ও জানুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত ২ হাজার ৬৬৩ কোটি ৪ লাখ টাকাসহ সর্বমোট রাজস্ব ১৫ হাজার ৬৯৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সুদসহ ২২ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের ২০ মে থেকে ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পেট্রোবাংলাকে বকেয়া পরিশোধে ৭টি দাবিনামা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ), মূল্য সংযোজন কর। এছাড়া ফেব্রুয়ারি ২০১৫ থেকে নভেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত চারটি কোম্পানির কাছে সুদ ছাড়া ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

জুলাই, ২০০৯ থেকে নভেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত মোট বকেয়া পাওনা ৩০ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। অপরদিকে পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সরকারকে যাবতীয় ট্যাক্স ও মুনাফার অংশ বাবদ ৫ হাজার ৯৯ কোটি ২০ লাখ ২৩ হাজার টাকা জমা দিয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের দুই মাসে(জুলাই-অক্টোবর) দিয়েছে ২ হাজার ১২৬ কোটি ৩০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

এদিকে বিপিসি সূত্র জানায়, গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের গত এপ্রিল পর্যন্ত বিপিসি ১২ হাজার ১৮৭ কোটি টাকার বেশি লাভ করেছে। জুন নাগাদ এটি সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। আগামী ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বিপরীতে ১৩ হাজার ২ কোটি টাকা নিট মুনাফা প্রাক্কলন করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিপিসি মুনাফা করে ৪ হাজার ১২৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত তেল কেনাবেচা থেকে করপোরেশনের নিজস্ব মুনাফা ছিল ১১ হাজার ৭২৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এর অধীনস্ত বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলোর (ইস্টার্ন রিফাইনারি,পদ্মা, মেঘনা, যমুনা অয়েলসহ ৭টি কোম্পানি) মুনাফা ৪৬০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। গত ২৫ এপ্রিল অকটেন ও পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ১০ টাকা এবং ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ৩ টাকা কমানো হয়।

এর আগে ১ এপ্রিল ফার্নেস অয়েলের দাম লিটারে ১৮ টাকা কমানো হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার সুফল পাচ্ছে বিপিসি। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কম দামে জ্বালানি তেল কিনে দেশের বাজারে অনেক বেশি দামে বিক্রি করায় মুনাফা বাড়ছে সংস্থাটির। মুনাফার এ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিচ্ছে না বিপিসি। এমনকি বকেয়া মূসক ও করের সিংহভাগই পরিশোধ করা হয়নি। কিন্তু সব মিলিয়ে তেলের দাম কমার কিংবা বিপিসির লাভের সুফল পাচ্ছে না জনগণ।

উল্লেখ, বিপিসি ও পেট্রোবাংলার বকেয়া আদায়ে ইতোপূর্বে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেয়া হলেও করপোরেশন দু’টি অর্থ পরিশোধ করেছি। যার ফলে এখন ব্যবস্থা হবে বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক সভায় করপোরেশন দু’টির বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিন্ধান্ত হয়।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল




@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন