আগামী দুইবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৮ শতাংশ: অর্থমন্ত্রী

  15-01-2017 01:08AM

পিএনএস, কুয়াকাটা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, ‘আগামী দু’বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশে যাবে এবং আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এটা ১০ শতাংশে নেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। আমরা সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বৃত্ত থেকে পেরিয়ে ৭ শতাংশের ঊর্ধ্বে গিয়েছি।’

সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায় শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন আয়োজিত তিনদিনব্যাপি ‘বিচ কার্নিভাল’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সরকারের নীতিমালায় কেউ পিছিয়ে থাকতে পারে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। দেশে গরীবের সংখ্যা এখন ২২ শতাংশ, গরিবের সংখ্যা দ্রুত হারে কমিয়ে আনা হচ্ছে। বৈষম্য নিরসনে বাংলাদেশ একটা অনন্য দেশ। অতিদারিদ্র্য ১০ শতাংশের কাছাকাছি। আমাদের দেশে দারিদ্র্যের সংখ্যা সাড়ে তিন কোটি। সাড়ে চার বছরের মধ্যে সবাইকে দারিদ্র্যসীমার মধ্য থেকে বের করে নিতে হবে। চ্যালেঞ্জটা অনেক বড় হলেও দেশের মানুষ অত্যন্ত বুদ্ধিমান। এজন্য পড়ালেখা না জানলেও কোনো প্রযুক্তি হাতে তুলে দিলে তা গ্রহণ করে নেয়। আমাদের কৃষক, চাষি, শ্রমিক অত্যন্ত দক্ষ, এটা আমাদের কৃতিত্ব।’

‘বিচ কার্নিভাল’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে কুয়াকাটা দেশে ও বিদেশের সকলের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। বর্তমান সরকার কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক পর্যটননগরী গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। মাস্টারপ্লান অনুযায়ী কুয়াকাটায় কাজ করার সুযোগ রয়েছে, সে সুযোগ কক্সবাজারে এখন আর নেই।

তিনি বলেন, কুয়াকাটার উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ পায়রা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।

পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এসএম গোলাম ফারুক’র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের জন্য অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশ। এদেশের পর্যটনশিল্প এখন বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে। পর্যটনকে ঘিরে ১১টি কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী ২১-২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ওশান ট্যুরিজমের মাধ্যমে সমুদ্রপথে কুয়াকাটা থেকে সুন্দরবন যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে পর্যটন মানসিকতা তৈরি করতে হবে।

পর্যটনমন্ত্রী বলেন, পায়রা সমুদ্র বন্দরের পাশে বিমানবন্দর করার জন্য প্রস্তাবনা রয়েছে।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের চিপ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান তালুকদার এমপি, সাবেক বস্ত্রপ্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন এমপি, বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাসানুর রহমান রিমন, এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক, পটুয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান মোশাররফ হোসেন, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউস, বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার শেখ মারুফ হাসান, কুয়াকাটা পৌর মেয়র আ. বারেক মোল্লা প্রমুখ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক এ কে এম শামীমুল হক সিদ্দিকী, পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

এর আগে সমুদ্রকন্যা কুয়াকাটায় ‘বিচ কার্নিভাল’ উপলক্ষে বেলা ১১টায় কুয়াকাটা পর্যটন মোটেল থেকে বেসারমরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি সমুদ্রপাড়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বেলুন উড়িয়ে ‘বিচ কার্নিভাল’র শুভ উদ্ভোধন করেন।

উল্লেখ্য, কুয়কাটায় ‘বিচ কার্নিভাল’ চলবে আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। বিচ কার্নিভালে রয়েছে স্থানীয় ও আমন্ত্রিত শিল্পীদের কনসার্ট, রাখাইনদের মেলা, বিভিন্ন খেলা, ফানুষ ওড়ানো, ওয়াটার বাইকসহ নানা আয়োজন।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন