আসছে পাটপাতার চা, বিজেএমসি নিয়েছে একটি প্রকল্প

  17-01-2017 10:10AM


পিএনএস, এবিসিদ্দিক: এবার পাটপাতা দিয়ে চা তৈরি হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)এই চা তৈরির একটি প্রকল্প গ্রহণ করছে বলে করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, এবিষয়ে এরই মধ্যে গবেষণা কাজ শেষ হয়ে গেছে। আর গবেষণায় দেখা যায়, পাটপাতা দিয়ে তৈরির চা একটি অলৌকিক পানিয়। এই পানিয় (পাটপাতার চা) বহু প্রকার রোগের নিবারন ও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। যেমন রক্তচাপ, ব্লাড ক্লোষ্টরেল নিয়ন্ত্রণ, চর্মরোগ, দৃষ্টিশক্তি, আমাশয়, পেটের ব্যথা, ডাইরিয়া, কোষ্টকাঠিন্য, আলসার প্রভৃতি রোগের জন্য পাটপাতার চা অত্যান্ত উপকারি। আর এ বিষয়গুলো গবেষনায় উঠে আসায় প্রাথমিক পর্যায়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকার ভেজষ চা আবিষ্কৃত হযেছে আর বহু রোগের প্রতিষেধকও প্রতিরোধক। যেমন গ্রিনটি: ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মূত্রথলি, স্তন, পাকস্থলি ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়, ধমনীতে রক্ত জমাট বাধা প্রতিরোধ করে, দেহের চর্বির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। ক্যাটেচিন কার্টিলেজের ভাঙন প্রতিরোধ করে হাড়ের সংযোগস্থলের ব্যথা দূর করে। আলঝেইমার ও পারকিনসন্স রোগের মতো নিউরোলজিক্যাল রোগের ঝুঁকি ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে এই চা বিশেষভাবে উপকারী। ব্ল্যাক চা : এটি গাজনকৃত চা। এতে ক্যাফেইনের মাত্রা সর্বোচ্চ। ধূমপানের ফলে ফুসফুসে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়, তা প্রতিরোধে এই চা বিশেষ উপকারী। হোয়াইট চা : এই অগাজনকৃত চায়ের ক্যান্সার প্রতিরোধী ভূমিকা আছে। উলং চা : আংশিক গাজনকৃত এই চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাগুণ দেহে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এছাড়া ফল, বীজ, শিকড় -কে ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করে এই প্রকার চা পাওয়া যায়। এর গুণাগুণ নির্ভর করে মূলত ব্যবহৃত উদ্ভিদের গুণাগুণের উপর। জিনজার (ginger), জিংকোবাইলোবা (ginkgo biloba), জিনসেং (ginseng), হিবিসকাস (hibiscus), জেসমিন(jasmine), রোসিপ(rosehip), মিন্ট (mint), রইবোস(rooibos), ক্যামোমাইল( chamomile), আই ইকনেশিয়া( I Echinacea) এক কাপ ব্ল্যাক চা থেকে ২ ক্যালরি, ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। এ ছাড়া ম্যাঙ্গানিজের দৈনিক চাহিদার ২৬ শতাংশ, সামান্য পরিমাণ রিবোফ্লাভিন, ফলেট, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও কপার পাওয়া যায়। ফ্ল্যাভোনয়েড চায়ের অন্যতম রাসায়নিক উপাদান। চা-তে প্রাণীর শরীর রক্ষাকারী অ্যান্টি-অঙিডেন্ট থাকে। এতে আরো আছে ভিটামিন ই, কে, সি, ফলিক এসিড, অ্যামাইনো এসিড, পটাশিয়াম ম্যাঙ্গানিজ, জিংক ক্লোরাইড, ট্যানিক এসিড, ক্যাফাইন, ট্যানিন, ক্যারোটিন, অ্যালবুমিন এবং আরো কিছু রাসায়নিক যৌগ। চায়ের অন্যতম রাসায়নিক উপাদান ফ্ল্যাভোনয়েড হৃদযন্ত্রকে অনেক বেশি সক্রিয় রাখে।

এটা হৃদরোগের বুঝি কমায়। যারা দিনে ৪/৫ কাপ চা পান করেন, তাদের হৃদরোগের কারণে মৃত্যুর হার ৬৮ শতাংশ কমে যায়। আর তাদের ৪৮ শতাংশের হৃদযন্ত্রের বিপর্যয় বা প্রথম আক্রমণ ঘটে না বললেই চলে। চায়ের ফ্ল্যাভোনয়েড শরীরের জন্য ক্ষতিকর ইলেকট্রনের ভারসাম্য রক্ষা করে। চা ধমনিতে রক্ত চলাচলের পথ বন্ধ হওয়া দূর করে। চা-ত্বক, ফুসফুস, পাকস্থলী, কোলন টিউমার হওয়া রোধ করে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। দৈনিক ৪/৫ কাপ কালো চা (যা আমাদের দেশের সাধারণ পানীয়) করোনারি আর্টারি সমস্যায় আক্রান্তদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এছাড়াও চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, শরীরের মধ্যে যে ফ্রি-র্যা ডিকালগুলো রক্তের ডিএনএ-ভেঙে দিয়ে লনজিভিটি ডিটারমিনেন্ট জিনকেও ভেঙে দেয়। ডিএনএ ভেঙে যাওয়ার কারণে নির্দিষ্ট কোষ অনেক সময় আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। যা প্রথমে টিউমার ধীরে ধীরে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এ ফ্রি-র্যা ডিকালগুলোর অপতৎপরতা রুখে দিয়ে মানুষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন