চায়ের উৎপাদন ও রফতানি কমছে, বাড়ছে আমদানি

  18-01-2017 09:30AM


পিএনএস, এবিসিদ্দিক: চা ও পাট এক সময় ছিল বাংলাদেশের অন্যতম রফতানি পণ্য। এখন এই দু’টি পণ্যই রফতানি কমে গেছে। এখন চা আমদানি করতে হচ্ছে। কমে গেছে চা রফতানি। ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশে চা আমদানি শুরু হয়েছে আর আমদানির পরিমাণ প্রতিবছরই বাড়ছে। চা বোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০০৭ সালে চা উৎপাদন হয়েছিল ৫৮ দশমিক ১৯ মিলিয়ন কেজি আর রফতানি হয়েছিল ১০ দশমিক ৫৬ কেজি। ২০০৮ সালে উৎপাদন হয় ৫৮ দশমিক ৬৬ কেজি আর রফতানি হয় ৮ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন কেজি। ২০০৯ সালে উৎপাদন হয় ৫৯ দশমিক ৯৯ মিলিয়ন কেজি আর রফতানি হয় ৩ দশমিক ১৬ মিলিয়ন কেজি। ২০১০ সালে উৎপাদন হয় ৬০ দশমিক ৪ মিলিয়ন কেজি, রফতানি হয় শূন্য দশমিক ৯১ মি. কেজি আর আমদানি করা হয় ৪ দশমিক ১৩ মি. কেজি। ২০১১ সালের উৎপাদন ৫৯ দশমিক ১৩ মি. কেজি, রফতানি ১ দশমিক ৪৮ কেজি আর রফতানি ৪ দশমিক ৯৮ কেজি। ২০১২ সালের উৎপাদন ৬২ দশমিক ৫৮ মি. কেজি, রফতানি ১ দশমিক ৪৮ মি. কেজি আর আমদানি হয় ৬২ দশমিক ৫২ মি. কেজি। ২০১৩ সালের উৎপাদন ৬৬ দশমিক ২৬ মি. কেজি, আমদানি ১০ দশমিক ৬২ মি. কেজি আর রফতানি হয় শূন্য দশমিক ৫৪ মি. কেজি। ২০১৪ সালের উৎপাদন ৬৩ দশমিক ৮৮ মি. কেজি, রফতানি ২ দশমিক ৬৬ মি, কেজি আর আমদানি ৬ দশমিক ৯৬ মি. কেজি। ২০১৫ সালের উৎপাদন ৬৭ দশমিক ৩৮ মি. কেজি, রফতানি শূণ্য দশমিক ৫৫ মি, কেজি আর আমদানি ১১ দশমিক ৪ মি. কেজি। ২০১৬ সালের উৎপাদন ৮৫ দশমিক ৫ মি. কেজি, আমদানি ৭ দশমিক ৭০ মি. কেজি আর রফতানি শূন্য দশমিক ৪৭ কেজি।

বর্তমানে দেশে ১৬২ টি চা বাগান আছে। চা আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৬৪ হাজার ৮৮৬ দশমিক ২৫ হেক্টর। মোট চাষাধীন জমির পরিমাণ ৫৯ হাজার ১৮ হেক্টর। ভবিষৎ চা আবাদযোগ্য এলাকা বা জমির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৮৬৮ দশমিক ২৫ হেক্টর। পঞ্চগড় এলাকায় চা বাগানগুলোর চা চাষাধীন জমির পরিমাণ ৭৫৮ দশমিক ৪০ হেক্টর। ঐ এলাকায় ক্ষুদ্রায়তন চাষাধীন জমির পরিমাণ ৭৮৬ দশমিক ৪১ হেক্টর। বান্দরবানে ক্ষুদ্রায়তন চাষাধীন জমির পরিমাণ ১২২ দশমিক ২৭ হেক্টর। আর বর্তমানে মৌলভীবাজারে ৯০ টি, হবিগঞ্জে ২৩ টি, সিলেটে ১৮টি, চট্রগ্রামে ২১ টি, পঞ্চগড়ে ৯টি আর রাঙ্গামাটিতে ১ টি বাগান আছে। বর্তমানে চা’র অভ্যন্তরীণ চাহিদা প্রায় ৮২ মিলিয়ন কেজি বলে চা বোর্ডের হিসাব।

চা’র উৎপত্তি চীন থেকে। বলতে এক ধরণের সুগন্ধযুক্ত ও স্বাদবিশিষ্ট পানীয়কেও বোঝানো হয়। চা’র নামকরণ করা হয় গ্রীকদেবী ‘থিয়া’ (Thea) এর নামানুসারে। এর জন্মস্থান চীনদেশে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Thea Sinensis I Camellia Sinensis| Pv Theaceae চা ঞযবধপবধব পরিবারের সদস্য। ১৬৫০ সালে চা প্রথম বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয়। আর ভারতে ১৮১৮-১৮৩৪ সালে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। প্রথম চা ব্যাগ চালু করে আমেরিকা। ২-৩টি কুঁড়ি থেকে চা তৈরি করা হয়। ওলন্দাজ বণিকরা ১৬১০ সালে প্রথম চীন থেকে চা আমাদনি শুরু করে। ইংরেজরা প্রথম চা আমদানি করতো চীন থেকে। চীন জাপান যুদ্ধের কারনে চীনের সাথে সম্পর্ক অবনতি হলে আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। ইংরেজরা বিকল্প চা উৎপাদনের জন্য তাদের নজর ভারতবর্ষের উপর পড়ে। ১৮৩৫ সালে তারা বিজ্ঞানীদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করেন। তার নাম “রয়েল সোসাইটি” ভারতবর্ষে চা উৎপাদনের করার জন্য অনুসন্ধান করাই এই কমিশনের কাজ। এই কমিটি কাজ শুরু করার আগেই শিলচর এবং করিমগঞ্জে চা গাছের সন্ধান পাওয়া যায়। এই বছরই প্রথম চীনের বাইরে বাণিজ্যিক ভাবে চা এর উৎপাদন কার্যক্রম গ্রহন করা হয়। ১৮৩৮ সালে সিলেট ও কাছাড়ে পরীক্ষামূলক ভাবে চা উৎপাদন শুরু হয়। ভারতবর্ষে আসামের লখিমপুরে, সিলেট ও কাছাড় জেলায় চা এর উৎপাদন ব্যাপকতা পায়।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন