পেঁয়াজ-রসুনের দাম কমলেও বেড়েছে তেলের

  20-01-2017 11:34AM

পিএনএস ডেস্ক: নিত্যপণ্যের বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কমেছে দেশি পেঁয়াজ-রসুন, আলু ও ব্রয়লার মুরগির। বেড়েছে আমাদানি রসুন ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। আর সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় সবজির দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে।

মূল্য বৃদ্ধি ও হ্রাসের বিষয়ে ব্যবসায়িরা বলছেন, পণ্য উৎপাদন ভালো হওয়ায় দার কমতে শুরু করেছে দেশি পণ্যের। আর আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যতার কারণে আমদানি পণ্যের দর বদ্ধি পাচ্ছে।

মৌসুমি শাক-সবজির বিষয়ে কাচা পণ্য ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে শীতকালীন সবজি আসছে। ফলে দাম ক্রেতার হাতে নাগালে রয়েছে। এতে স্বস্তিও রয়েছে।

রাজধানীর দয়াগঞ্জ, সূত্রাপুর, ধূপখোলা মাঠ, রায়সাহেব বাজার, নয়াবাজার, সেগুনবাগিচা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজি ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। কিছু কিছু সবজির দাম পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমেছে।

সপ্তাহের ব্যবধ্যানে আলুর দাম দুই থেকে তিন টাকা কমে ১২ থেকে ১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম হালিতে ২ থেকে ৫ টাকা কমেছে। এছাড়া বাজারে চাল, মাছ, ডাল, তেল ও আদার দাম রয়েছে স্থিতিশীল। অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে বোতলজাত সোয়াবিন তেলের দাম।

আড়াই মাসের ব্যবধানে দেশের বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১১ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত অক্টোবর মাসে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল ছয় টাকা। এর আড়াই মাস পর ব্যবসায়ীরা লিটার প্রতি আরো পাঁচ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন মন্ত্রণালয়কে। সেটা অনুমোদন না পেলেও বুধবার থেকে দোকানিরা ওই দর বাড়িয়ে দিয়েছেন।

শুক্রবার পরিবেশক পর্যায়ে প্রতি লিটার রুপচাঁদা ৯৮ টাকা থেকে বেড়ে ১০৩ টাকায় সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দোকানিরা। আর এর সঙ্গে দুই থেকে পাঁচটাকা যুক্ত করে ১০৫ থেকে ১০৭ টাকায় প্রতিলিটার সয়াবিন তেল বিক্রি করা হয়েছে।

তবে সরকারি হিসেবে বোতলজাত সয়াবিন তেলের প্রতি এক লিটারের মূল্য দেখানো হয়েছে ৯৮ থেকে ১০২ টাকা।

নিত্য পণ্যের মধ্যে মানভেদে দেশি রসুনের দাম কমেছে ১০ টাকা। শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৯০ টাকায়। যা সপ্তাহ পূর্বেছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে কমেছে দুই থেকে চার টাকা। পণ্যটির প্রতি কেজির মূল্য রাখা হচ্ছে ২০ থেকে ২৬ টাকা, আলু প্রতি কেজি ১২ থেকে ১৮ টাকা, যা একসপ্তাহ আগে ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকায়।

একই সঙ্গে কমেছে ব্রয়লার মুরগিরর দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫৫ থেকে ১৬৫ টাকায়। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি হালি ৩০ টাকা, হাঁসের ডিম ৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে

এদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি পণ্যের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। কেজিপ্রতি দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ১০০ টাকা, মুগ ডাল (দেশি) ১২০ টাকা, ভারতীয় মুগ ডাল ৯৫ টাকা, মাশকলাই ১৩০ টাকা এবং ছোলা ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি আদা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে আমদানি রসুনের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা করে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি আমদানি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায়, কাঁচামরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, টমেটোর দাম বেড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শশা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঝিঙা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়, পটল ২৫ থেকে ৩০ টাকা, মূলা ১৫ টাকা, কাকরোল ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, উচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, চিচিঙ্গা ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, জলপাই ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্ধুল ২৫ থেকে ৪০ টাকায়, বরবটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় (গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়), কচুরছড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা, নতুন গোল আলু ১২ থেকে ১৮ টাকা, লতি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ১০ থেকে ১৫ টাকা।

এছাড়া শালগম ৩০ টাকা কেজি, প্রতিটি ফুলকপি ১৫ টাকা, বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা আটি, লালশাক ১০ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা এবং লাউশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতিটি লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, প্রতিটি ছোট কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং বড় কুমড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত আছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৪৩০ থেকে ৪৪০ টাকা এবং খাসির মাংস ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, পাকিস্তানি লাল মুরগি প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, ইলিশ কেজি প্রতি (মাঝারি) ১২০০ টাকা এবং দেড়কেজি ওজনের প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ২০০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে চালের দাম সপ্তাহের ব্যাবধানে কিছুটা বেড়েছে। সব ধরনের চালে প্রতি কেজিতে প্রায় এক থেকে দুই টাকা করে বেড়েছে। স্বর্ণা চাল ৪০ টাকা, পারিজা ৪১ টাকা, মিনিকেট ভালো ৫২ টাকা, মিনিকেট নরমাল ৪৮ টাকা, বিআর আটাশ চাল ৪২-৪৪ টাকা, নাজিরশাইল ৪৮-৫৬ টাকা, বাসমতি ৫৬ টাকা, কাটারিভোগ ৭৪ থেকে ৭৬ টাকা, হাস্কি নাজির চাল ৪০ টাকা এবং পোলাও চাল ১০০ (পুরাতন), নতুন ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন