কাঁচা পাট রপ্তানি ৫০ শতাংশ কমে গেছে

  06-03-2017 06:10PM

পিএনএস ডেস্ক: বিদেশের বাজারে চাহিদা না থাকায় কাঁচা পাট রপ্তানি ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। নারায়ণগঞ্জের পর দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মোকাম খুলনা নগরীর দৌলতপুরের রপ্তানিকারকরা থমকে গেছেন।

পাটের বিকল্প ভিন্ন কাঁচামাল ব্যবহার হওয়ায় বাংলাদেশি কাঁচামালের জন্য নতুন বাজার সৃষ্টি করা সম্ভব হচ্ছেনা। ব্যাংকের ঋণের বোঝা টানতে না পেরে রপ্তানিকারকরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ অবস্থার মধ্যদিয়ে আজ সোমবার উদযাপিত হচ্ছে দেশে প্রথমবারের মত বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয় পাট দিবস ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গেল অর্থ বছরে ১১ লাখ ৩৭ হাজার বেল পাট রপ্তানি হলেও চলতি অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে ৬ লাখ ৯৭ হাজার বেল পাট রপ্তানি হয়েছে। চীন ও পাকিস্তানের অধিকাংশ জুটমিল বন্ধ থাকায় সেখানে বাংলাদেশি কাঁচা পাটের চাহিদা নেই।

বাংলাদেশ জুট এ্যাসোসিয়েশন-বিজেএ খুলনার সূত্র জানায়, ২০১০ সাল পর্যন্ত ৪২টি দেশে কাঁচাপাট রপ্তানি হয়েছে। ২০১১ সালের পর থেকে ভিয়েতনাম, জার্মানি, ফ্রান্স, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, জাপান, গুয়াতেমালা, ডিজবুতি, স্পেন, হল্যান্ড, তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়া, ইজিপ্ট, ইরান, ইতালি, কিউবা, সাউথ আফ্রিকা, কোরিয়া, ইউকে ইত্যাদি দেশে পাট রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

সূত্র মতে, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ১৬টি দেশে ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৬২৮ বেল কাঁচা পাট রপ্তানি হয়। রপ্তানিকৃত পাটের মূল্য ১ হাজার ৫৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। চলতি অর্থ বছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ১৩টি দেশে ৬ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩০ বেল পাট রপ্তানি হয়। এর মূল্য ৬৬৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব এবং ভিন দেশের মিলগুলো কাঙ্খিত পাট না পাওয়ায় বিকল্প হিসেবে অন্য কাঁচামাল বেছে নিয়েছে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে।

রপ্তানিকারক আকুঞ্জি ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী হারুন-অর-রশীদ জানান, গেল মৌসুমে ভারতে সবচেয়ে বেশি পাট উৎপাদন হয়েছে। ফলে সেখানকার মিলগুলোতে বাংলাদেশি কাঁচা পাটের চাহিদা নেই। স্থল বন্দরে ধর্মঘটসহ নানা শর্তারোপের কারণে গেল বছর ছয় মাস পাট রপ্তানি বন্ধ ছিল। পাকিস্তানের ১২টি জুটমিলের মধ্যে ৬টি জুটমিল চালু রয়েছে। চীনের ১০০ জুটমিলের মধ্যে ৯টি, ব্যাংককের ৫টি এবং ভিয়েতনামের একটি জুটমিল চালু রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই বিদেশের মিলগুলোতে বাংলাদেশি পাটের চাহিদা নেই। নতুন বাজারও সৃষ্টি হয়নি। দৌলতপুরের ২৫০ রপ্তানিকারকের মধ্যে মাত্র ১২জনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম রয়েছে। বাকিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।

সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা সূত্র জানায়, দৌলতপুরের ১১জন পাট ব্যবসায়ীর কাছে ৬০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বকেয়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পরিশোধ করছে না। রূপালী, এক্সিম ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের খেলাপি পাট রপ্তানিকারকের সংখ্যা ১৩৮জন। দুদক সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের জন্য সোনালী জুটমিলের মালিকসহ চার ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশকে আবারও সোনালি আঁশের দেশ হিসেবে রূপান্তর করে পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে জাতীয় পাট দিবস। গত বছরের ১ ডিসেম্বর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ‘জাতীয় পাট দিবস’ উদযাপনের প্রস্তুতি সভায় এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। এর আগে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ এর সফল বাস্তবায়ন উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পাট দিবসের ঘোষণা দেন।

সুত্র: রাইজিংবিডি


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন