স্বস্তি সবজিতে, কমেনি চালের দাম

  30-06-2017 03:56PM

পিএনএস : ঈদের ছুটিতে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম ছিল ঊর্ধ্বগতি; বিশেষ করে কাঁচামরিচ ও টমেটোর দাম বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত। শুক্রবার থেকে কমতে শুরু কাঁচামরিচসহ শাকসবজির দাম। কিন্তু চালের দাম কমানোর সরকারি ঘোষণা আসলেও মোটা চালের দাম কমেনি খুচরা বাজারে।

রাজধানীর কাঁচা ও চালের বাজার ঘুরে দেখা এমনই চিত্র। শুক্রবার কাপ্তানবাজার, যাত্রাবাড়ী ও জুরাইন ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক দিন ধরে দাম বেড়ে যাওয়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০/১৩০ টাকা কেজিতে। অথচ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছিল ১৬০ টাকা। তবে টমেটোর দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০/৯০ টাকা দরে, যা আগে ছিল ১২০ টাকা কেজি।

এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ীর সবজির আড়ৎদার জামাল বলেন, বুধবার রাত থেকে সবজি আসা শুরু করেছে স্বাভাবিক সময়ের মতোই। দামও কমেছে। তাহলে দাম বাড়লো কেন জানতে চাইলে জামাল বলেন, সরবরাহ কম ছিল। বিশেষ করে কাঁচামরিচ ও টমেটোর সরবরাহ ছিল অনেক কম।

বাজার ঘুরে দেখা গেল, প্রতিকেজি বেগুন ৪০ থেকে ৫০, শসা ২৫/৩০, চালকুমড়া প্রতিপিস ৩৫ থেকে ৪০, কচুরলতি কেজি ৪০ থেকে ৫০, পটল ৩৫, ঢেঁড়স ৪০, ঝিঙ্গা ৫০, চিচিঙ্গা ৪০, করলা ৪৫ থেকে ৫০, কাঁকরোল ৪০, আলু ১৫ থেকে ১৬, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ ও কচুরমুখী ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া লেবু হালিপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, লালশাক ১০ টাকা, পুঁইশাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ১০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা, পাটশাক ১০ টাকা ও আলুশাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে দেখা গেল, চালের বাজার এখনো সাধারণ মানুষের নাগালছাড়া। প্রতিকেজি চালে ছয়টাকা কমবে এমন ঘোষণা আসলেও এখনো আগের দামেই চাল কিনতে হচ্ছে, এমনটাই অভিযোগ যাত্রাবাড়ী বাজারে চাল কিনতে আসা মর্জিনা বেগমের। তিনি বলেন, মোটা স্বর্ণাচাল আগে কিনেছি ৫০ টাকা কেজি দরে। আজকেও তা ৫০ টাকা। তাহলে তো দাম কমলো না। তিনি বলেন, মোটা আটাশ চালের কেজিও ৫০ টাকা।

যাত্রাবাড়ী, জুরাইনের চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি দোকানেই আটাশ চাল প্রতিকেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া স্বর্ণাচাল প্রতি কেজি ৪৮/৪৯ টাকা, পারিজা চাল ৪৮ টাকা, মিনিকেট (ভালো মানের) ৬০ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৬ টাকা, সাধারণমানের নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, উন্নতমানের নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, পাইজাম চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, কাটারিভোগ ৭৬ থেকে ৭৮ টাকা, পোলাওয়ের চাল ১০০ (পুরনো) টাকা ও নতুন ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাড়তি দাম প্রসঙ্গে যাত্রাবাড়ীর খুচরা চাল ব্যবসায়ী সিরাজ হাওলাদার বলেন, আগের বেশি দামে কেনা চাল লসে বিক্রি করবো নাকি! তিনি বলেন, ঘোষণা এসেছে। তবে মিল থেকে কম দামের চাল আসলে কমে বিক্রি করা সম্ভব হবে।

চালের দাম কেন কমছে না প্রসঙ্গে জুরাইন চালবাজার সমিতির সভাপতি মো. ইউসুফ বলেন, আমাদের আড়তে আগের মাল রয়েছে। বেশি দামে কেনা মাল ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি সম্ভব নয়। যদি মিল মালিকেরা কম দামে মাল পাঠায়, তাহলে আমরাও কম দামে বিক্রি করবো।

এদিকে, মাছের দাম রয়েছে গত সপ্তাহের মতোই। বাজারে আকার ভেদে প্রতিকেজি রুই মাছ ২৪০ থেকে ৩২০, সরপুঁটি ১৮০ থেকে ৩৫০, কাতলা ৩৩০ থেকে ৩৬০, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৬০, সিলভার কার্প ২০০ থেকে ২৫০ ও চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্চে। পাঙ্গাস প্রতিকেজি ১৫০ থেকে ২৫০, টেংরা ৬০০, মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০ থেকে ৮০০ ও প্রতিটি ইলিশ ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে, ১৬০০ টাকা। গরুর মাংস ৫০০ থেকে ৫২০ ও খাসির মাংস ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া মুরগির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০, লেয়ার মুরগি ২০০, দেশি মুরগি প্রতিপিস ৪০০ ও পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন