দেশে চালের বাজারে মোটা চালের তীব্র সংকট

  04-07-2017 03:40AM

পিএনএস ডেস্ক: দেশে চালের বাজারের চলমান সংকটে খুচরা বিক্রেতা, পাইকার সর্বশেষ মিলঘর পর্যন্ত। দাম কমবে ও আমদানীতে ১৮শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার অনেকটা হতাশার আশা হিসেবে বাঁচিয়ে রেখেছে নিন্ম আয়ের মানুষকে। সরকারি কেজি প্রতি ছয় টাকা কমার সিদ্ধান্তকে সাধারন মানুষ স্বাগত জানালেও হতাশা বাড়ছে প্রতিনিয়ত।

আর এদিকে গত একদিনের ব্যাবধানে মিনিকেট চালে দোকানিদের বস্তা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা ছাড় দিলে ও মোটা চাল সংকটে চলছে চালের বাজার।

মারজাহান নামের গার্মেন্টেস কর্মী চাল কিনতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঈদের আগেই টিভিতে দেখেছি চালের নাকি কেজিতে ছয় টাকা কমবে। কই আমি তো আগে ও ৫২ টাকা কেজিতে মোটাচাল কিনেছি আজকেও একই দরে কিনলাম। তবে কমলো কই?

দাম বাড়তি নেওয়া প্রসঙ্গে জুরাইন বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা জুয়েল বলেন, ভাই পাইকারের ঘর থেকে বিশ রোজায় ত্রিশ বস্তা মোটা চাল কিনেছি। আমার কেনাই পড়েছে কেজি প্রতি পঞ্চাশ টাকা। তবে ৫২টাকা না বিক্রি করলে খামু কি? লসে বিক্রি করা সম্বভ না।

এদিকে মোটা চালের তীব্র সংকটের বিষয়ে জুরাইন পাইকারি চালের বাজারের পাইকার ও জুরাইন চালের বাজার সমিতির সাধারন সম্পাদক জিল্লুর রহমান জানান, আমার ঘরে মোটা চাল এক বস্তা ও নেই। শুধু মিনিকেট চাল আছে। আমি রোববার থেকে বস্তা প্রতি ৪০থেকে ৫০টাকা পর্যন্ত ছাড়ে বিক্রি করছি।

কারণ হিসেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেনাপোলে চাল আমদানিকারক থেকে জানতে পারলাম বস্তা প্রতি ৫০/৬০টাকা কমবে। আগামি কাল নতুন চাল বাজারে আসবে। এতে প্রভাব পড়বে চালের বাজারে।

মোটা চাল কেন তুলছেন না দোকানে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো বলেন, মোটা চাল আমি আজকেও বগুড়ার মজুমদারের ও নওগাঁ মিল ঘরে ফোন দিয়ে দাম জিঙ্গাসা করেছি। আগের দামই বলতেছে। তাই ডিউ দিচ্ছি না। দাম কমবে এমন সরকারি আশ্বাসে এখন খুচরা দোকানিদের সাথে ও আমাদের ঝগড়া হচ্ছে প্রতিদিন। অথচ আমাদের কি করার আছে বলেন?

এদিকে জুরাইনের প্রায় সবকটি চালের পাইকারের ঘর পরিদর্শনে দেখা যায় সব কটি পাইকারি চালের গোডাউন গুলোতে চাল মজুদ খুব কম। মোটা চাল কোনো ঘরেই নেই।

জুরাইন পাইকারি বাজারের মেসার্স আরাফাত রাইচ এজেন্সীর ম্যানেজার ইমন জানান, চাল আরো দুই/তিন দিন পর দোকানে উঠাবো আগে পরিস্থিতি বুইঝা লই।

তিনি আরো বলেন, আমি বেনাপোল ক্লিয়ারেন্স শাখায় পরিচিত এক আত্বীয়ের মাধ্যমে জানতে পারলাম, ভারত থেকে আমদানি কৃত চাল বোর্ডারে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে চালের দর কমার সম্ভবনা আছে। কিন্তু কেজি প্রতি কমতে পারে দুই/তিন টাকা। আর ইন্ডিয়া থেকে আমদানি চালের মধ্যে রয়েছে চিকন স্বর্না ও রত্না চাল। মোটা চালের দাম কমার লক্ষন নেই এই মুহুর্তে।

এদিকে কুষ্টিয়ার আলাল এগ্রো এন্ড রাইস মিলের ম্যানেজার প্রবীর কুমারের সাথে চালের দাম কমার বিষয়ে কথা বলে জানা যায়, এই মুহুর্ত্বে মোটা চালের সংকট উত্তরন দুরুহ ব্যাপার।

তিনি বলেন, বাজারে ধানের তীব্র সংকট। বেশি দামে ভেজা ধান কিনে কমে কি ভাবে বিক্রি করবো?

তিনি আরো বলেন ভারতের চিকন স্বর্না ও রত্না চাল আমরা বস্তা প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ছাড়ে বিক্রি করছি। ঈদের পর থেকে বেচা বিক্রি নেই। আমরাও টাকা রোলিং করতে পারছি না। সংকটে আমরা আছি। মোটা চাল নতুন ধান না আসা পর্যন্ত সংকট থেকে উত্তরন সম্বভ নয়। আমদানি নির্ভর হয়েই আমাদের সংকট মোকাবেলা করতে হবে। এর বিকল্প নেই।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন