অর্থমন্ত্রীর বোকামির কারণে জলবায়ু তহবিল হাতছাড়া

  29-01-2018 12:59AM



পিএনএস ডেস্ক: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক তহবিলের খুব ছোট অংশ পায়। এর মূল কারণ আমার বোকামি। আমার বোকামির কারণেই রিও সম্মেলনের জলবায়ু তহবিলে বাংলাদেশ যুক্ত হতে পারেনি। ওই সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রতিবছর জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ১০ কোটি ডলার দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা সেখানে যুক্ত হয়নি।

রোববার রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জলবায়ু তহবিলবিষয়ক দুদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজ, সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট রিসার্চ, ব্র্যাক এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি) যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার সঙ্গে সঙ্গে দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে হবে। দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩০ মিলিয়ন বা তিন কোটি। এটিকে কমিয়ে ১০ মিলিয়নে (এক কোটি) আনতে পারলে মনে করবো সরকার সফল। এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমি মনে করি কোনো সরকারই এই পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে যাবে না। বরং যারাই ক্ষমতায় আসবে, তারাই দেশের দারিদ্র্য কমাতে কাজ করবে।

জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৭০ সালে যখন আমার বয়স ৩৬ বছর, তখন থেকেই আমি এ ধরনের সমস্যা দেখে আসছি। তখন আমি দেখলাম বিশ্বের ছয় ভাগ মানুষ ৬০ ভাগ সম্পদ দখল করে আছে। সেটা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার মতোই একটি সমস্যা। সেই সমস্যা এখনো রয়ে গেছে।

মুহিত বলেন, দেশে উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। ফলে জলবায়ুর মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর প্রত্যাশা অনুসারে সফলতা আসছে না। তাই জাতীয় উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে বেশি জোর দেয়া উচিত।

দারিদ্র্য বিমোচনই বর্তমান সরকারের প্রধান ও অগ্রাধিকারমূলক কাজ জানিয়ে তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলা ও দেশের উন্নয়নমূলক কাজও করতে হবে।

দুদিনব্যাপী ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ওই সম্মেলনে পাঁচ মহাদেশের ১৩ দেশের জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। তারা ১৭টি প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে বিশ্ব জলবায়ু সম্পর্কে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তাদের বক্তব্যে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও জলবায়ু তহবিল গঠনের বিষয়টি উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ড. সালিমুল হক, বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজের ফেলো গোলাম রব্বানি, ইউনির্ভাসিটি অব টরন্টোর প্রফেসর ড. মনিরুল কিউ মির্জা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সস্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন