‘দাম এহন কইমা গেছে’

  02-02-2018 12:07PM

পিএনএস ডেস্ক: আমিন সরদার থাকেন কারওয়ান বাজারে। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে সবজির ব্যবসা করে আসছেন। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও খুব দম নিয়েই সবজি বিক্রি করছেন। বাজাদর কেমন জানতে চাইতেই আমিন জানান, তিন চার মাস ধইরা তরকারির দাম বেশি ছিল। কিন্তু এখন আর সেই দাম নেই অনেক কইমা গেছে। মানুষ কম দাম পাইয়া বেশি করেই সবজি কিনতাছে।

বাজারে সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। গত বছর জুড়েই সবজির বাজার উপ্তাপ থাকলেও শীতের শেষ দিকে সবজির দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এসেছে। টমেটোর কেজি ১২০ টাকা থেকে নেমে এসেছে মাত্র ১৫ থেকে ২০ টাকায় । পেঁয়াজের দামও কেজিতে ৩০ টাকা কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। সাধারণত বৃহস্পতি, শুক্র ও শরিবার বাজারে লোকসমাগম বেশি থাকে। এজন্য বাজার দরও চড়া থাকে। তবে বাজারে সবজি বাড়ার ফলে এইদিনেও ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে- শালগম, মুলা, পেঁয়াজের কালি, পেঁপে, বেগুন।

প্রতিকেজি শালগম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। মুলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে টাকা কেজি। বাজারে নতুন আসা উস্তে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে।

এছাড়া কাঁচা পেঁপের দাম আগের মতোই ১৫ থেকে ২০ টাকায় রয়েছে। বেগুনও আগের ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে ২০ টাকা কেজিতে নেমে আসা শিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। আর বিচিসহ সীম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে যে লাউ দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা তা এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০ টাকায়।

দাম কমেছে শীতকালীনর ফুলকপি ও বাঁধাকপির। প্রতিপিচ ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। একই দামে পাওয়া যাচ্ছে বাঁধাকপি। নতুন আলুর দাম কমে হয়েছে ২০ টাকা। আর পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি দরে।

এদিকে মোটা চাল ও মিনিকেটের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কাটারিভোগ কেজিতে ছয় টাকা বেড়ে ৮০ টকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির সঙ্গে কমেছে মাছের দাম। প্রতিকেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে মাত্র সাড়ে তিনশ টাকায়। অন্যান্য মাছের মধ্যে প্রতিকেজি রুই ২০০ থেকে ২২০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের টেংরা ও ছোট মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। যা আগে ছিল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। পুঁটি মাছ ২০০ টাকা থেকে কমে এখন ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সবচেয়ে কম দামে খলিসার কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। যা দু`এক সপ্তাহ আগেও ২০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হয়। প্রতি কেজি ভেদা ১৫০ টাকা ও মলা ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় শিং ৫০০ টাকা, ছোট শিং ৪০০ টাকা ও কৈ ৩০০ টাকা, বড় শোল ও গজার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এসব মাছের সরবরাহ বৃদ্ধিতে চাষের মাছ পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়ার দাম কেজিতে ৫০ টাকা কমে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় মিলছে। ছোট আকারের রুই ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, মাঝারি আকারের রুই ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও বড় আকারের রুই ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পোয়া ১০০ থেকে ১২০ টাকা, সরপুঁটি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস আগের তুলনায় কেজিতে প্রায় ৩০-৫০ টাকা বেড়েছে। আগে গরুর মাংস ৪৩০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ৪৮০ টাকা কেজি। খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের মাংসের দোকানি মো. ছায়েদ মিয়া জানান, চাহিদার তুলনায় বাজারে গরুর সরবরাহ কম। এ ছাড়া বিভিন্ন উৎসবের কারণে দাম বেড়েছে।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন