ঢাকায় আরো অর্ধডজন বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা

  08-05-2018 03:11PM

পিএনএস ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক ব্যবসায়ীর আগমনের কারণে আন্তর্জাতিক মানের হোটেলের চাহিদাও দিন দিন ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই চাহিদাকে মাথায় রেখে ঢাকায় আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অর্ধ ডজন আন্তর্জাতিক হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি সম্প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে অতিথিদের সংখ্যাও বাড়ছে। এটি মাথায় রেখেই হোটেল নির্মাণের এই পরিকল্পনা।’

গ্রুপটি রাজধানীর নিকেতন এলাকায় প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৭০ রুম-বিশিষ্ট একটি হোটেলে নির্মাণ করছে। এটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ‘সুইসোটেল হোটেল এবং রিসোর্ট’ নামে একটি সুইস হোটেল কোম্পানিকে।

জসিম উদ্দিন আরো বলেন, ‘আমরা চূড়ান্তভাবে ব্যবসায়িক হোটেল প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যা আমাদের শহরে এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।’

রাজধানীর বিলাসবহুল হোটেল ব্যবসায় বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করার জন্য বেঙ্গল গ্রুপই একটিমাত্র স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়। যমুনা, মরিয়ম এবং প্রিমিয়ার গ্রুপও এই তালিকায় প্রবেশ করছে।

পদ্মা ব্রিজ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রো রেল এবং এলএনজি টার্মিনালের মতো বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প নির্মাণের জন্য নতুন ব্যবসার এই সুযোগ তৈরি হয়েছে।

একই সময়ে গার্মেন্ট শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরাও অধিক সংখ্যায় বাংলাদেশে আসছে। ইতোমধ্যে দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন।

সামগ্রিকভাবে নতুন এই হোটেলগুলোতে প্রায় ৫,৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রত্যাশা করা হচ্ছে বলে মনে করছেন শিল্প উদ্যোক্তারা।

মরিয়ম গ্রুপ রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় প্রায় ১,৫০০ কোটি ব্যয়ে ২০০ রুম-বিশিষ্ট হোটেল নির্মাণ করছে। ‘হলিডে ইন ঢাকা সিটি সেন্টার’ নামে এই হোটেলটি চলতি বছরের শেষ নাগাদ অতিথিদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

‘হলিডে ইন’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলম আহমেদ বলেন, ‘বিলাসবহুল হোটেলের বিপুল চাহিদা রয়েছে। আসলে, ঢাকা শহরের হোটেলগুলো বিপুল এই চাহিদাকে পূরণ করতে পারছে না।’

যমুনা গ্রুপ ঢাকায় ৭০০ রুমের ‘জে.ডব্লিউ ম্যারায়ট’ হোটেল প্রতিষ্ঠার জন্য আমেরিকার বিলাসবহুল হোটেল কোম্পানি ‘ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল’ এর সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। হোটেলটি প্রগতি সরণির যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় নির্মিত হবে।

প্রিমিয়ার গ্রুপ রাজধানীর গুলশান এলাকায় জে.ডব্লিউ ম্যারিয়টের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান কর্তৃক একটি হোটেল নির্মাণ করছে। গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের প্যারেন্ট কোম্পানি ‘ইউনিক গ্রুপ’ বনানীতে ‘শেরাটন ঢাকা’ নামে আরেকটি হোটেল প্রতিষ্ঠা করছে।

অন্যদিকে, লেকশোর হোটেল ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজধানীর উত্তরাতে একটি ব্যবসায়িক হোটেল স্থাপনের জন্য থাই আতিথেয়তা গ্রুপ ‘দুসিত ইন্টারন্যাশনালের’ সঙ্গে একত্রিত হয়েছে।

এই হোটেলগুলো নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর একবার চালু হয়ে গেলে, ঢাকার বর্তমান হোটেল রুমের চেয়ে দিগুনেরও বেশি রুমের যোগান দিতে পারবে। ঢাকায় বর্তমানে হোটেলগুলোতে একত্রে ১২৫০টি রুম রয়েছে। নির্মিতব্য হোটেলগুলো চালু হলে এই সংখ্যা হবে ৩০০০।

প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ডিরেক্টর এমএ আউল বলেন, নতুন উদ্যোক্তরাও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে এবং এতে করে রুমের ট্যারিফও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমানে ঢাকায় পাঁচটি ইন্টারন্যাশনাল হোটেল তাদের সেবা চালু রেখেছে। এগুলো হলো- ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালের ওয়েস্টিন এবং লা মেরিডিয়ান, র্যা ডিসন, প্যান প্যাসিফিক এবং আমারি।

শেরাটনের বিপণন ব্যবস্থাপক সৈয়দ মাহারান হোসেনের মতে, গত ছয় বছরে প্রায় ৩.১ মিলিয়ন বিদেশি বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছে এবং ঢাকার বিলাসবহুল হোটেলগুলির গড় আয়ের হার ৬০-৭০ শতাংশ।

পিএনএস/আনোয়ার


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন