বাংলাদেশকে ১১ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

  17-05-2018 11:44AM

পিএনএস ডেস্ক: পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে বাংলাদেশকে ১১ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯১৩ কোটি টাকা। ‘সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ’ শিরোনামের প্রকল্পের আওতায় এই টাকা খরচ হবে।

বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে দুই পক্ষের মধ্যে এসংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম। বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ের আবাসিক প্রধান চিমিয়াও ফান সই করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিমসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই প্রকল্পের আওতায় কৃষি ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের ২০ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে সহযোগিতা করা হবে। সৃজনশীল, পরিবেশসম্মত, টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহারে এই ঋণ ব্যবহার হবে।

বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান চিমিয়াও ফান বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে, সবুজ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভিযোজন খাতে প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ছে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। অন্যদিকে দারিদ্র্য বিমোচনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে। চাকরির ব্যবস্থা হবে। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় পরিবেশসম্মত ও ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা সম্ভব হবে।

চিমিয়াও ফান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ফলে এখানে টেকসই উন্নয়ন জরুরি। এ জন্য এখন থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবেলায় পিকেএসএফ বিশেষ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কাজ করছে সংস্থাটি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হুমকিতে আছে। সে ক্ষেত্রে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বাড়বে’

চুক্তি প্রসঙ্গে ইআরডির সচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবেলায় সক্ষম করে তোলা হবে।’

পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিম বলেন, ‘পিকেএসএফের সব প্রকল্পই সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয়। পিকেএসএফ তাদের যেকোনো প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। যেকোনো ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংকের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে এক হাজার ৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে ৯১৩ কোটি টাকা। বাকি ১৬৬ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে পিকেএসএফ। এই প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ঋণের সার্ভিস চার্জ ০.৭৫ শতাংশ। ছয় বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরের পরিশোধ করতে পারবে বাংলাদেশ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সারা দেশে এখন ৭০ লাখ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা আছে। যার মধ্যে ৯০ শতাংশই পরিবেশ ঝুঁকিতে আছে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পিকেএসএফের অর্থায়নে ক্ষুদ্র উদ্যোগ খাতে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করা।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন