সংশোধনীর মাধ্যমে অর্থবিল পাস

  27-06-2018 11:13PM

পিএনএস ডেস্ক: ইন্টারনেট সেবার ওপর ভ্যাট হ্রাস, মোবাইল ফোন সংযোজন শিল্প, কম্পিউটার যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক হ্রাস ও কমদামি সিগারেটের ওপর শুল্ক বৃদ্ধিসহ কয়েকটি সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় সংসদে অর্থবিল-২০১৮ পাস হয়েছে।

বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন এবং স্পিকার তা পাসের জন্য কণ্ঠভোট দেন। এ সময় সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে বিলটি পাস করেন। সেইসঙ্গে অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।

গত ৭ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট ও অর্থবিল-১৮ উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। তারপর সংসদে তা আলোচনা হয়। আর বুধবার অর্থবিলটি পাস হলো। বৃহস্পতিবার ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট সংসদে পাস হবে।

সংসদে ও সংসদের বাইরে বাজেটের কয়েকটি বিষয়ে সংশোধনীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শক্রমে অর্থমন্ত্রী সংসদে বুধবার এসব সংশোধনীর প্রস্তাব আনেন।

অর্থবিল সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী
গুঁড়ো দুধ আমদানিতে শুল্কহার বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। একইসঙ্গে ড্রাই মিক্সড ইনগ্রেডিয়েন্টের শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ, ব্যাটারিসহ বিভিন্ন শিল্পের মৌলিক কাঁচামাল ন্যাচারাল ব্যারিয়াম সালফেটের শুল্কহার ১০ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন তিনি।

দেশে উৎপাদিত অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, আর্গন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড পণ্যগুলোর ওপর আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে ২০ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি আরোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

হেপাটাইটিস-সি রোগের ওষুধ পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে শূন্য শুল্কহার, সিমকার্ড বা স্মার্ট কার্ডের কাঁচামাল আমাদানিতে শুল্কহার হ্রাস করে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন তিনি। ওষুধ শিল্পের মোড়ক উৎপাদনে কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কহার কমিয়ে ৫ শতাংশ, লিফ স্প্রিং আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ, সাড়ে ৭০০ ওয়াট ক্ষমতার মোটর তৈরি উৎসাহিত করতে আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর এবং ৫ শতাংশ অগ্রিম ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়। টেলিভিশনের ওপেন সেল আমদানিতে পৃথক এইচএস কোড সৃষ্টি করে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে।

বর্তমানে ২ হাজার সিসি হতে ৩ হাজার সিসি পর্যন্ত ডাবল কেবিন পিকআপ আমদানিতে ২৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি বিদ্যমান রয়েছে। আমদানি উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ডাবল কেবিন পিকআপের ওপর বিদ্যমান রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ শতাংশ হতে হ্রাস করে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়।

জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবং ধূমপায়ীর সংখ্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে নিম্নস্তরের সিগারেটের প্রতি ১০ শলাকার মূল্য ৩২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা এবং অতি উচ্চস্তরের সিগারেটের প্রতি ১০ শলাকার মূল্য ১০১ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০৫ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়। উল্লেখ্য, এ বাজেটেই সিগারেটের অন্যান্য স্তরে মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বর্তমানে শুল্ক-করসহ মূল্যের আগের অভিঘাত অপরিবর্তিত রেখে প্রতি গ্রাম জর্দার ট্যারিফ মূল্য ১ দশমিক ২০ টাকা এবং প্রতি গ্রাম গুলের ট্যারিফ মূল্য শূন্য দশমিক ৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

শীতকালে ত্বকের পরিচর্যায় ব্যবহৃত পেট্রোলিয়াম জেলির ওপর সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিকট বিদ্যুৎসেবাকে সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে অর্থবছরে ফিলামেন্ট বাল্বের ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে।

মোটরসাইকেল শিল্পের অধিকতর বিকাশের লক্ষ্যে দেশীয় মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি বহাল রেখে সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শুধু স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ৭ শতাংশের অতিরিক্ত মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ক্রেডিট রেটিং এজেন্সির বিপরীতে প্রযোজ্য ১৫ শতাংশ ভ্যাটের পরিবর্তে নিট ৭ শতাংশ করা হয়েছে।

বর্তমান অর্থবছরের বাজেটে শুধু ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে এয়ার লাইন্সগুলোর বন্দর সেবার ওপর ভ্যাট অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ইতোপূর্বে এ সেবার বিপরীতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এ সেবার ওপরে ভ্যাট প্রযোজ্য। ফলে, এ সেবার ওপর ৭ জুন প্রদত্ত ভ্যাট অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন