ভারতীয় রুপিকে ধরে ফেলছে বাংলাদেশের টাকা!

  16-09-2018 03:06PM

পিএনএস ডেস্ক :ভারতীয় মুদ্রা রুপির রেকর্ড দরপতন ঘটেছে। গত তিন যুগের মধ্যে বর্তমান সময়ে এসে রুপিকে ধরে ফেলার উপক্রম করেছে টাকা। ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ৮৫ রুপি। আবার লেনদেন হুন্ডির মাধ্যমে হলে এর বেশিও মিলছে। বিষয়টি সীমান্ত এলাকায় এক ধরনের খুশির আমেজ ছড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাসহ ভারতের বড় বড় শহরের শপিং মলে বাংলাদেশিদের কেনাকাটাও বেড়েছে। ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বেড়েছে চোরাচালানও।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, গত আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভারতে রুপির মান নিম্নমুখী হতে শুরু করে। ফলে রুপির বিপরীতে টাকার মূল্যমান বাড়তে থাকে। ডলারের দাম বৃদ্ধি ও সংকট, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিসহ ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে রুপির এই দরপতনে টাকার মর্যাদা বেড়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশি মুদ্রা ১০০ টাকায় সমান সমান ভারতীয় ১০০ রুপি পাওয়া যেত। এরপর টাকার মান কমতে থাকে। একপর্যায়ে তা রুপির চেয়ে অর্ধেকেরও কমে এসে দাঁড়ায়।

দরপতনের কারণে অনেকেই টাকা দিয়ে রুপি কিনে রাখছে। পর্যটনসহ বিভিন্ন কারণে ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিরাও বাড়তি সুবিধা ভোগ করছে। একই কারণে আগের চেয়ে বেশিসংখ্যক পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে ভারত থেকে পণ্য আমদানি বেড়েছে। বেড়েছে চোরাচালানও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল সীমান্তের ওপারে ভারতের পেট্রাপোলে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রের স্বত্বাধিকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন-চার দিন ধরে বাংলাদেশি ১০০ টাকায় ভারতীয় ৮৫ রুপি পাওয়া যাচ্ছে। মুদ্রা বিনিময়ের এই হার গত তিন যুগের মধ্যে রেকর্ড।

পেট্রাপোলের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়কারী পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘জ্বালানি তেল কেনার জন্য আমাদের প্রচুর পরিমাণ ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে। বর্তমানে ১০০ টাকায় আমরা ভারতীয় ৮৫ রুপি দিচ্ছি। এ কারণে আগের চেয়ে ভারতে পর্যটক আসার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।’

কলকাতার রিপন স্ট্রিটের ব্যবসায়ী মুন্নাভাই বলেন, ‘রুপির বিপরীতে টাকার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কলকাতা নিউ মার্কেট এলাকায় কেনাকাটা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। চোরাচালানের পাশাপাশি ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি হচ্ছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে নানা কারণে রুপির দরপতন হওয়ায় টাকা সামনে চলে এসেছে।’

খুলনার খালিশপুর থেকে আসা পর্যটক ইয়াসিন আলী খান বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছি। টাকা ভাঙিয়ে ১০০ টাকার বিনিময়ে ৮৫ রুপি পেয়ে খুব খুশি লাগছে। মনে হচ্ছে, আগামী দিনে টাকা রুপিকে ধরে ফেলবে।’

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘রুপির দরপতনের কারণে আমরা লাভবান হচ্ছি। তবে প্রতিবেশী দেশের মুদ্রার মান কমে যাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কেও আমাদের সতর্ক থাকা দরকার। অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি বন্ধ, রেমিটেন্স বৃদ্ধি, গার্মেন্ট-সামগ্রীর রপ্তানি বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটরিংয়ের কারণে টাকার মান বেড়েছে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন