‘বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যাংকারদের আরও সর্তকতার তাগিদ’

  02-12-2018 05:02PM

পিএনএস (আহমেদ জামিল) : আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পরিবহন ব্যবস্থায় বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রেক্ষিতে ব্যাংকারদের বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে বিল অব লেডিং,এয়ারওয়ে বিল, ট্রাক রিসিপ্টের বিপরীতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাংকারদের সতর্ক হতে হবে। (০২ ডিসেম্বর) রোববার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, শুল্ক বিভাগ, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার, শিপিং লাইন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। যাতে বাণিজ্য সংক্রান্ত উদ্ভুদ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়।

‘ট্রান্সপোর্ট ডকুমেন্টস ইন ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন বাই ব্যাংকস: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ নামক শীর্ষক কর্মশালায় এই গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।


কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (ট্রেনিং) ড.শাহ মো. আহসান হাবীব। ১০ সদস্যের গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো: আব্দুল কাইউম; বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান; বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক প্রদীপ পাল এবং মোক্তার হোসেন; বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক অন্তরা জেরীন; বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ; ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদুর রহমান; মিউচুয়াল ট্রস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ টি এম নেছারুল হক এবং ওসান নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার ফয়জুর রহমান।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রিফর্মস অ্যাডভাইজার এবং সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সুবিধায় গুণগত পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক পরিবর্তন এবং ঝুঁকিগুলো বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত একটি নতুন গাইড লাইন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা সংশ্লিষ্টদের খুব উপকারে আসবে।

বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, আমদানি-রফতানির আকার ক্রমেই বাড়ছে। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত জটিলতাও বাড়ছে। সব স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি আলাদা রোড ম্যাপ তৈরি করে সমাধান করতে হবে।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, শুল্ক বিভাগে ডেট এক্সপায়ার ব্যাংকগ্যারান্টিগুলো ব্যাংককে ফেরত দিতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোকে ফরেন এক্সচেঞ্জ লেনদেনের সঙ্গে জড়িতদের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরী।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাহবুব-উল-আলম বলেন, ট্রান্সপোর্ট ডকুমেন্টস উন্নত বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ না হলেও বাংলাদেশের মতো দেশগুলো খুব গুরুত্ব দেয়। কারণ এ ধরণের ডকুমেন্টের সঙ্গে রফতানির হিসাব এবং ঋণ সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য পাওয়া যায়। এ কারণে এসব তথ্য আরও সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা জরুরী।

কাস্টমস ভ্যালুয়েশান অ্যান্ড ইন্টারনাল অডিট কমিশনারেটের কমিশনার ড. মঈনুল খান বলেন, বাণিজ্য ভিত্তিক অর্থ পাচার মোট অর্থ পাচারের ৮০ শতাংশ। অর্থপাচরের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ব্যাংকের সঙ্গে শুল্ক বিভাগের সমন্বয় জরুরী। কারণ এক পণ্যের আড়ালে ভিন্ন পণ্য আনছে এ ধরণের অভিযোগ আছে। এ ধরণের ঘটনা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ শাহীন বলেন, বাণিজ্য সংক্রান্ত জটিলতা বছরের পর বছর চলছে। কিন্তু কোন সমস্যারই তেমন সমাধান হয়নি। সব অংশীজনদের নিয়ে একটি কর্মী দল গঠন করে সময়োপযোগী সমাধান খুঁজে বের করা জরুরী।

ওসান নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের ফায়েজ খোন্দকার বলেন, ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে বাণিজ্য ভিত্তিক যেসব সমস্যা তার সমাধান করতে হবে। এতে আমদানি-রফতানি কাযক্রম সহজ হবে।

সমাপনী বক্তব্যে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড.তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, আগামী দিনে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে বাণিজ্য আরও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।


পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন