গত বছরের সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বরে

  02-01-2019 10:18PM

পিএনএস ডেস্ক : গেল ২০১৮ সালে সবচেয়ে কম মূল্যস্ফীতি হয়েছে ডিসেম্বরে। অবশ্য প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতি আগের মাসের তুলনায় কমেছে।

ডিসেম্বরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এর আগে নভেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। জানুয়ারিতে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি দিয়ে বছর শুরু হয়। মার্চে মূল্যস্ফীতির হার কমে হয় ৫ দশমিক ৬৮। আরও কমে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ হয় জুনে। ফলে বছরজুড়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত বছরের ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তৈরি মূল্যস্ফীতিবিষয়ক হালনাগাদ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মন্ত্রী জানান, সদ্য সমাপ্ত বছরে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ছিল সরকারের। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরও কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কম ছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বর্তমানে ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া চালের উৎপাদন বেশি ছিল। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকায় অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়েনি।

মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যানের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বছরজুড়ে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি কমার কারণে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও গত দুই মাস ধরে নিম্নমুখী। যদিও এর আগে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিতে বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে।

তিনি আরও বলেন, সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমার ক্ষেত্রে মূলত চালের দামের প্রভাব ছিল বেশি। গত বছর চালের দাম আগের বছরের তুলনায় কম ছিল। এ সময় বোরো ও আউশের উৎপাদন ভালো হয়। আমনের উৎপাদনও ভালো ছিল। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম যেভাবে বাড়ার কথা ছিল, সেভাবে বাড়েনি। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কম থাকার কারণে মূল্যস্ফীতিতে চাপ তৈরি হয়নি। একই সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় হারও স্থিতিশীল ছিল। এসব কারণে বিদায়ী বছরে মূল্যস্ফীতির হার নিম্নমুখী ছিল।

বিবিএসের তথ্য মতে, গত এক বছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এর আগের এক বছরে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ।

ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যফীতি কমে হয়েছে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, নভেম্বরে যা ছিল ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। জানুয়ারিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ, যা জুনে কমে হয় ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ ছিল খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার।

ডিসেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। জানুয়ারিতে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার ৩ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং জুনে ছিল ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এ হার ছিল ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

মন্ত্রিত্ব না পেলে অভিযোগ নেই: নতুন মন্ত্রিসভায় কোন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব নিতে আগ্রহী জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নতুন মন্ত্রিসভায় কে কোন মন্ত্রণালয় পাবেন, তা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। তবে কোনও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব না পেলেও তার কোনো অভিযোগ থাকবে না।
তিনি বলেন, 'আমরা পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। নতুনদেরও সুযোগ দিতে হবে।'

মুস্তফা কামাল বলেন, সরকারের হাতে যেসব উন্নয়ন প্রকল্প আছে, তা বাস্তবায়ন এবং উন্নয়নের স্বার্থেই জনগণ বর্তমান সরকারে ভোট দিয়েছে। জনগণ বুঝতে পেরেছিল, সরকার পরিবর্তন হলে চলমান এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন