অবরোধের কারণে চলনবিলে প্রতিদিন ৮ কোটি টাকার দুধ নষ্ট হচ্ছে

  11-01-2015 08:41AM

পিএনএস (এম এস আলম বাবলু), পাবনা : শস্য ও মৎস্যভাণ্ডার খ্যাত দেশের সর্ববৃহৎ বিলাঞ্চল চলনবিল অঞ্চলের ৯টি উপজেলার প্রায় ৮ কোটি টাকার দুধ নষ্ট হচ্ছে টানা ৫ দিনের অবরোধের কারনে। এতে দুগ্ধ সমৃদ্ধ এ অঞ্চলের প্রায় শত শত ডেইরি খামার মালিকদের মাথায় হাত উঠেছে।

পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, তারাশ, সিংড়া, গুরদাসপুর, রায়গঞ্জ বেড়া-সাঁথিয়াসহ কয়েকটি উপজেলা নিয়ে গড়ে উঠেছে দেশের প্রধান গরুর দুধ উৎপাদনকারী এলাকা। এ অঞ্চলের লক্ষাধিক খামারে প্রতিদিন প্রায় ৫ লাখ লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত দুধ মিল্ক ভিটা, আড়ং (ব্র্যাক), প্রাণ, ফার্মফ্রেশ, অ্যামোমিল্ক, আফতাব, রংপুর ডেইরিসহ কয়েকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করে সারা দেশে বিক্রি করে থাকে। যা থেকে প্রতিদিন ৮ কোটি টাকার অধিক ডেইরি খামার মালিকরা পেয়ে থাকেন। তবে বিএনপি-জামায়াত ২০দলীয় জোটের ডাকা অনিদিষ্টকালের অবরোধের করণে ৫দিন চলনবিল অঞ্চলে দুধ শিতল প্রক্রিয়াজাত করণ কোম্পানীর গাড়ী না আসায় এ অঞ্চলের উৎপাদিত দুধ গুলো নষ্ট হচ্ছে। এতে গরু খামার মালিকরা উৎপাদিত দুধ বিক্রয় না করতে পেরে তাদের মাথায় হাত পড়েছে। খামার মালিকরা লোকশানে পরলেও সস্তায় দুধ মেলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে পিঠা-পায়েস খাওয়ার ধুম পড়েছে।

শনিবার চাটমোহর উপজেলার রেলবাজার, নতুন বাজার, থানা বাজার, মথুরাপুর, মূলগ্রাম বাজার গুলো ঘুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, সাধারন দুধ বিক্রেতাদের পাশাপাশি ক্রেনে বিক্রয় করা দুগ্ধ সমৃদ্ধ এলাকার ডেইরি খামার মালিকরাও দুধ নিয়ে এসেছে বাজারে বিক্রয়ের জন্য। বাজার গুলোতে দুধের আমদানী প্রচুর হওয়ায় দামও কমে গেছে। গত ৫দিন আগেও যে বাজারে দুধের দাম ছিলো ৫৫ টাকা থেকে ৬৫ টাকা দরে। বর্তমানে তা কমে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে।

চাটমোহর উপজেলার ডেইরি খামার মালিক মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, গরু খামার মালিকদের বর্তমান মরার উপরে ফাঁরার ঘাঁ। গত ৫দিন ধরে এ অঞ্চলে দুগ্ধ শিতল প্রক্রিয়াজাত কোম্পানির গাড়ী না আসায় প্রতিদিন প্রায় আমার ৫‘শ ৮০ লিটার করে দুধ নষ্ট হচ্ছে। এরপর গো-খাদ্যর যে দাম বেড়েছে তাতে এ মুহুর্তে গো-খাদ্য ক্রয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

রেলবাজারের গরু খামার মালিক আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল কুদ্দুস সরকার বলেন, গত ৫দিন কোম্পানীগুলোর গাড়ী না আসায় উৎপাদিত দুধ বাজারে নিয়ে যেও বিক্রয় না হওয়ায় ফেরত আনতে হচ্ছে। ফিরতকৃত দুধগুলো ফ্রীজযাত করা হচ্ছে, নাম হলে বিক্রয় করা হবে।

চাটমোহরের কুমারগাড়া গ্রামের খামারি সাইফুল ইসলাম জানান, অবোরধের কারণে দুধ সংগ্রহ করছেনা দুগ্ধ শিতল প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলো। বাজারেও দুধের দাম না থাকায় গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

পিএনএস/মো.সাইফুল্লাহ/মানসুর

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন