‘রাজস্ব ফাঁকি ও অর্থ পাচার রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’

  22-05-2019 10:11PM

পিএনএস ডেস্ক : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, রাজস্ব ফাঁকি ও অর্থ পাচার রোধে সকল আমদানি-রফতানিকৃত পণ্য যথাযথভাবে স্ক্যানিং করা হবে। পাশাপাশি আমদানি-রফতানিতে যারা ওভার অ্যান্ড আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সঙ্গে জড়িত তাদের জরিমানার পাশাপাশি মামালা করা হবে।

মামলার রায় অনুযায়ী তাদেরকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতির যে আকার, তার সঙ্গে রাজস্ব আয়ের মিল নেই। অর্থাৎ রাজস্ব আদায় কম। এর অন্যতম কারণ দুর্নীতি। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি রফতানি করা হয়। এ অবস্থার উত্তরণে আগামী অর্থ বছরে দুর্নীতি বন্ধে জোর দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে কাস্টমস থেকে পণ্য আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে স্ক্যানার মেশিন বসানো হবে। এর মাধ্যমে কোন কন্টিনারে কী আছে, তা জানা যাবে। আর দুর্নীতি কমলে রাজস্ব আদায় দ্বিগুন হবে। এছাড়া রাজস্ব আদায়ে আউট সোর্সিং হিসেবে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীদেরকে নিয়োগ দেয়া হবে। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী যে রাজস্ব আদায় হয় তা প্রায় অর্ধেক। রাজস্ব আদায় বাড়াতে এসব জনবল নিয়োগ দেয়া হবে।

বুধবার (২২ মে) শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থনীতি-বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সৌজন্য সাক্ষাতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন। ইআরএফ সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, দৈনিক ইনকিলাবের ক্রীড়া সম্পাদক রেজাউর রহমান সোহাগ এবং ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের ট্যাক্স জিডিপির অনুপাত মাত্র ১০ শতাংশ। যেখানে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে এটা ১৮ থেকে ১৯ শতাংশ। এখন যাদি আমাদের রাজস্ব আদায় ৩ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা হয়। এক্ষেত্রে আরও ৩ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা হওয়ার কথা।

আমাদের আরও ৩ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা পেতে হবে। আমরা যদি ৬ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা রজস্ব আহরণ করতে না পরি তাহলে আমাদের যে অর্থনীতি গতিশীল বা গভীরতা পেয়েছে এটার সাথে রাজস্ব আদায়ের কোনো রকম মিল থাকে না। আমাদের এ কাজটা করতে হবে। মুস্তফা কামাল বলেন, খুবই দুঃখজনক যে যারা ট্যাক্স দেয়, তারাই দেয়। মাত্র ২১ বা ২২ লাখ ট্যাক্স দেয়।

এছাড়া যাদের দেবার ক্ষমতা রয়েছে তারাও কোনো ট্যাক্সই দেয় না। সুতরাং আগামী বাজেটে আমরা কোনো ভাবেই করের হার বাড়াবো না। তবে যারা কর দেয় না তাদেরকে করের আওতায় নিয়ে আসবো। তিনি বলেন, যারা ট্যাক্স দেয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু ট্যাক্স দিচ্ছে না তাদের কাছে পৌঁছাবো, তাদের নিকট থেকে ট্যাক্স আদায় কারবো। এ জন্য আমরা প্রথম বছর আউট সোর্সিং হিসেবে ১০ হাজার জনবল বাড়াবো। এসব জনবল হবে স্তুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী, যারা কোনো কাজ পাচ্ছে না তাদেরকে আউট সোর্সিং হিসেবে এ নিয়োগ করবো।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা প্রতিটি উপজেলায় ট্যাক্স অফিস নিয়ে যাবো। আগামী জুলাই মাস থেকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরু করবো। তবে এটা প্রথম থেকেই পুরোপুুরি বাস্তবায়ন সম্ভাব হবে না। সম্প্রতি একটি জরিপে দেখা গেছে রাজধানী ঢাকা, ও বড় বড় শহরে প্রায় ৯ লাখ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রথমে আমরা বড় বড় জাগায় এটা বাস্তবায়ন করা হবে। ভ্যাট বাস্তবায়নের মাধ্য দিয়েই আমরা আয়করের বিষয়টি জনগণের নিকোট নিয়ে যাবো। তবে জোর করবো না। জনগণ যখন ভ্যাট দিবে তখন কর দেয়াতেও অভ্যস্ত হয়ে যাবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ইআরএফ সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রকল্পের মাধ্যমে বাজেট থেকে কীভাবে সহায়তা দেয়া যায়, তা বিবেচনা করবে সরকার। এ ব্যাপারে ইআরএফের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চান তিনি। এ সময়ে ইআরএফের সদস্য সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতে রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কারসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন