সার্ভিস চার্জ কমানোর নির্দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

  31-10-2019 09:39PM

পিএনএস ডেস্ক : ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে সঞ্চয়ী হিসাবে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে কোনো চার্জ কাটা যাবে না। এতদিন পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত স্থিতি সার্ভিস চার্জমুক্ত ছিল। চলতি হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নির্দেশনার ফলে ব্যাংকের মুনাফা কিছুটা কমলেও সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।

সংশ্নিষ্টরা জানান, ব্যাংকগুলোর আয়ের একটি অংশ আসে বিভিন্ন ধরনের ফি ও সার্ভিস চার্জ থেকে। বর্তমানে অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ ফি থেকে ব্যাংকগুলো প্রায় এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা আয় করে। নতুন নির্দেশনার ফলে এখন থেকে আয় এক হাজার কোটি টাকার নিচে নামবে বলে সংশ্নিষ্টদের ধারণা। তবে স্থিতি নেতিবাচক পর্যায়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্যাংকে টাকা রাখতে আগ্রহ দেখান না এ রকম ক্ষুদ্র অনেক আমানতকারী ব্যাংকিং চ্যানেলে আসবে। বৃহস্পতিবারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংক খাতে আমানত বৃদ্ধি এবং ক্ষুদ্র আমানতকারীদের ব্যাংকমুখী করতে নতুন এ নির্দেশনা দেওয়া হলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, সঞ্চয়ী হিসাবে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ আদায় করা যাবে না। এ ধরনের হিসাবে ১০ হাজার টাকার বেশি তবে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ফি নেওয়া যাবে। আর ২৫ হাজার টাকার বেশি তবে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা কাটা যাবে। এতদিন এটা ৩০০ টাকা ছিল। দুই লাখ টাকার বেশি তবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে চার্জ কাটার সর্বোচ্চ সীমা ৩০০ টাকা থেকে কমিয়ে ২৫০ টাকা করা হয়েছে। আর ১০ লাখ টাকার বেশি স্থিতির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় নামানো হয়েছে।

সংশ্নিষ্টরা জানান, সঞ্চয়ী হিসাবে খুব কম সুদ দেয় ব্যাংক। এর ওপর বাড়তি চার্জ আরোপ করায় অনেক সময় স্থিতি নেতিবাচক হয়ে যায়। উদারহণ হিসেবে বলা যায়- একজন তার সঞ্চয়ী হিসাবে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা রাখলেন। এ থেকে বছরে দু'বার সার্ভিস চার্জ বাবদ দুইশ' টাকা কেটে নিল ব্যাংক। সার্ভিস চার্জের ২০০ টাকার বিপরীতে আবার ভ্যাট হিসেবে কাটল আরও ৩০ টাকা। তবে সঞ্চয়ী হিসেবে তিন শতাংশ হারে হয়তো ওই গ্রাহক বছরে পেলেন ১৫২ টাকা ৫০ পয়সা। এতে করে বছর শেষে তার স্থিতি দাঁড়াল পাঁচ হাজার ৪২২ টাকা ৫০ পয়সা। তার মানে বছরের শুরুতে যে পরিমাণ টাকা রেখেছিলেন, বছর শেষে পেলেন তার চেয়ে ৭৭ টাকা ৫০ পয়সা কম। এ রকম পরিস্থিতি এড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ ফি কমানোর নির্দেশ দিয়েছে।

সার্কুলার জারির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে এ বিষয়ে জারি করা সার্কুলারে সঞ্চয়ী হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি হিসেবে প্রতি ষাণ্মাসিকে ৩০০ টাকা এবং চলতি হিসাবে ৫০০ টাকার বেশি আদায় না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে ২০১০ সালের নির্দেশনার মাধ্যমে সঞ্চয়ী হিসাবের পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে কোনো অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ ফি আদায় করা যাবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। আর ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত গড় আমানত স্থিতির ক্ষেত্রে প্রতি ষাণ্মাসিকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা নির্ধারণ করা যাবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন