আমানতের সুদহার কমায় বেকায়দায় গ্রাহকরা

  07-02-2020 10:39AM


পিএনএস ডেস্ক: আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে সাধারণ গ্রাহক। বাড়তি মুনাফার আশায় কষ্টার্জিত অর্থ ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ হওয়ার আশঙ্কা করছে ব্যাংকগুলো। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ ব্যাংকেরই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সামনে এই ধারা অব্যাহত থাকলে ব্যাংকগুলোর আমানত আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দিকে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্বৃত্ত অর্থ আমানত সরকারি ব্যাংক সাড়ে ৫ শতাংশ ও বেসরকারি ব্যাংকে ৬ শতাংশে সুদে রাখার নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালনের তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৯ শতাংশ ঋণের হার কার্যকর করতে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে ব্যাংকগুলো। আমানতের অভিন্ন এ সুদহার কার্যকর হওয়ায় ব্যাংকগুলো থেকে অনেকেই আমানত তুলে নেয়ার তাগিদ দিচ্ছে। এ বিষয়ে দেশর তৃতীয় প্রজন্মের একটি ব্যাংকের একটি শাখা ব্যবস্থাপক গতকাল জানিয়েছেন, আমানতের অভিন্ন সুদহার অর্থাৎ ৬ শতাংশ কার্যকর হওয়ার পর অনেকেই ব্যাংকের শাখায় এসে খোঁজখবর নিচ্ছেন। কেউ কেউ আমানত প্রত্যাহার করতে চাচ্ছেন; কিন্তুতাদেরকে নানাভাবে সান্ত্বনা দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, যে ব্যাংকেই যান না কেন সব ব্যাংকেই একই অবস্থা। তবে তাদেরকে এ রকম সান্ত্বনা দিয়ে বেশি দিন রাখা যাবে না। আশঙ্কার বিষয় হলো, আমানতপ্রবাহ তো এমনিতেই কমে আসছে, এর ওপর ৬ শতাংশ কার্যকর হওয়ার পর আমানতপ্রবাহ আরো কমে যেতে পারে। অপর দিকে ব্যাংক থেকে আমানত তুলে বেশি সুদের আশায় বুঝে-না-বুঝে নানা ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করলে আমানতকারীদের কষ্টার্জিত পুরো অর্থই ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এর সরাসরি প্রভাব আমানতকারীসহ ব্যাংকের ওপর পড়বে বলে মনে করছেন ওই কর্মকর্তা। কারণ এতে আমানতকারীই অর্থ খোয়াবে না, ব্যাংকের আমানতপ্রবাহ কমে গেলে ঋণ দেয়ার মতো অর্থ ব্যাংকের হাতে থাকবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাধারণ আমানতকারীদের মতো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোরও একই অবস্থা। গত ৯ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্বৃত্ত অর্থের ৫০ ভাগ সরকারি ব্যাংকে সাড়ে ৫ শতাংশে এবং বাকি ৫০ ভাগ বেসরকারি ব্যাংকে ৬ শতাংশে আমানত রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়; কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানই বেশি হারে আমানত রেখেছে ব্যাংকগুলোতে। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ উদ্বৃত্ত অর্থই সরকারি ব্যাংকে আমানত রেখেছে, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরিপন্থী।

এমতাবস্থায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা যথাযথ পরিপালনের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে এক সার্কুলার জারি করা হয়েছে। সার্কুলারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অনুলিপি তুলে ধরে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা প্রয়োজন। সে পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্বৃত্ত অর্থের ৫০ ভাগ সরকারি ব্যাংকগুলোতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ শতাংশ এবং বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে বাকি ৫০ ভাগ সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এমন নির্দেশনা ব্যাংকগুলোকে যথাযথভাবে পরিপালন নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেয়া হলো। সূত্র: নয়া দিগন্ত

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন