আমানতকারীদের আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ বাংলাদেশ ব্যাংকের

  26-02-2020 09:55PM

পিএনএস ডেস্ক : আমানত নিয়ে গুজবে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব ছড়িয়েছে, কোনো ব্যাংক বন্ধ হলে এক কোটি টাকা থাকলেও সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পাওয়া যাবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা মূলত আমানতের বিপরীতে বীমা থেকে পরিশোধের বিধান রয়েছে। ব্যাংক বন্ধ হলে অর্থ ফেরতের পদ্ধতির অন্য বিধান রয়েছে। আর এ মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি কোনো ব্যাংকের নেই।

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম। এ সময় সহকারী মুখপাত্র ও মহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, আমানত বীমা আইন সংশোধন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও সুরক্ষার আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে না বুঝে কেউ কেউ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে সংবাদ সম্মেলন ডাকল বাংলাদেশ ব্যাংক।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগামী কয়েক বছরে কোনো ব্যাংক বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থায় নেই। তারপরও কোনো ব্যাংক বন্ধ, দেউলিয়া বা অবসায়ন হলে আমানত বীমা স্কিম থেকেই এক লাখ টাকা পর্যন্ত ফেরত দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো ব্যাংক অবসায়িত হলে ওই ব্যাংকের সম্পদ থেকে সব আমানতকারীর পাওনা পরিশোধের সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিলে আট হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা জমা আছে। বীমা তহবিলের সংরক্ষিত টাকার পরিমাণ অনুযায়ী ৯২ শতাংশ আমানতকারীর হিসাব বীমাকৃত। এ ছাড়া প্রস্তাবিত আমানত সুরক্ষা আইনে ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীদের এ সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। পাশাপাশি বীমা কাভারেজের পরিমাণ দ্বিগুণ করা সম্ভব হলে প্রায় ৯৬ শতাংশ আমানতকারী সম্পূর্ণ বীমাকৃত হবেন।

তিনি জানান, আমানত সুরক্ষা ট্রাস্ট তহবিলের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি ট্রেজারি বন্ড খাতে বিনিয়োগ করে। এ বিনিয়োগ থেকে পাওয়া মুনাফা ও তফসিলি ব্যাংক থেকে আদায় করা প্রিমিয়ামের মাধ্যমে তহবিলের অর্থ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভবিষ্যতে শুধু এই তহবিল থেকেই শতভাগ আমানত বীমার আওতায় আসবে বলে আশা করা যায়।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, কোনো ব্যাংক বন্ধ হলে আমানত বীমা তহবিল থেকে বিদ্যমান আইনে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের মধ্যে আমানতকারীকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করে। আর এ জন্য ৯০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হয়। তিনি বলেন, ১৯৮৪ সালে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় সেখানে আমানতের সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার বিধান ছিল। পরে ২০০০ সালে আমানত বীমা আইন প্রণয়ন করে এক লাখ টাকা ফেরতের বিধান করা হয়। আর প্রস্তাবিত সংশোধিত আইনে কাভারেজের হার আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে ফেরত দেওয়ার পরিমাণ সময়ে সময়ে নির্ধারণের ক্ষমতা ট্রাস্টি বোর্ড তথা বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রদান করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন