আমদানির প্রভাবে কমছে দেশীয় ধান-চালের দাম

  10-01-2021 05:36PM

পিএনএস ডেস্ক : খাদ্যশষ্যের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরের জনপদ দিনাজপুর জেলা। এই জেলার বেশিরভাগ উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে ধান চাষ হয়। সম্প্রতি আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষে বোরো চাষের জন্য জমি তৈরিসহ নানা কাজে ব্যস্ত এখানকার কৃষকরা। এরই মধ্যে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হওয়ায় হতাশ এই এলাকার কৃষকরা।

ইতিমধ্যে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরুর একদিন পরেই স্থানীয় খুচরা বাজারে কমেছে চালের দাম। সেইসঙ্গে কমেছে কৃষকের কষ্টে ফলানো স্বপ্নের সোনার ফসল ধানের দাম। আর এতে বিপাকে পড়েছেন হিলি প্রান্তিক কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

যদিও ধানের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের কিছুটা লোকসান গুণতে হবে, তবে চালের দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে দিনমজুরদের মাঝে।

হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাল আমদানির প্রভাবে সব ধরণের চালের দাম কমেছে। প্রকারভেদে প্রতিকেজি চালে কমেছে ৪ থেকে ৫ টাকা। দুই দিন আগে স্বর্ণা-৫ জাতের চাউল প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা কেজি দরে। সেই চাউল এখন কেজিতে ৪ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা দরে।

এছাড়া ৪৫ টাকার গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকায়। ৫৮ টাকার মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকায় এবং ৬০ টাকার কাটারি জাতের চাউল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি দরে।

অন্যদিকে ধানের বাজারেও নেমেছে ধস। কয়েক দিনের ব্যবধানে সব ধরনের ধানের দাম কমেছে মণ প্রতি ১শ' থেকে ১৫০ টাকা। স্বর্ণা-৫ জাতের ধান কেনা-বেচা হতো মণ প্রতি ১২২০ টাকা। সেই ধান এখন মণ প্রতি ১৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১০৯০ টাকায়। ১১৫০ টাকার গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৯৯০ টাকায়। ১২৫০ টাকার রঞ্জিত বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকায় এবং ১৯০০ টাকার আতব জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে ১৬৫০ টাকা দরে। ধানের দাম কমে যাওয়ায় খরচ তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।

হিলির কৃষক আমজাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জানান, ভরা মৌসুমে সরকার ভারত থেকে চাল আমদানি করায় ধানের দাম কমে গেছে। এভাবে যদি ধানের দাম কমতে থাকে তাহলে আমাদের কৃষকদের পথে বসতে হবে। আমরা আমনের খরচ তুলতে পারবো না।

তারা বলেন, ইতিমধ্যে সব ধরণের ধানের দাম কমে গেছে। আমরা বোরো চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি, কারণ ধানের দাম কমলে খরচ তুলতে না পারলে ধান চাষ করে কী হবে? সরকারের কাছে অনুরোধ, চাল আমদানি করলেও যাতে কৃষকের ধানের দাম ঠিক থাকে।

হিলি বাজারের চাল ব্যবসায়ী স্বপনসহ কয়েকজন জানান, ভারত থেকে চাল আমদানির প্রভাবে বাজারে সব ধরণের চালের দাম কমেছে। প্রকারভেদে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কমেছে। চালের দাম কমায় আমাদের বেচা-কেনাও একটু বৃদ্ধি পেয়েছে।

হিলির ধান ব্যবসায়ী মুসফিকুর রহমান জানান, চাল আমদানির প্রভাবে ধানের দাম কমেছে। প্রকারভেদে প্রতিমণ ধানে কমেছে ১শ' থেকে ১৫০ টাকা করে কমেছে। বর্তমানে ধান আমরা ক্রয় করছি না। কারণ ধান কিনে আমাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল না হলে আমরা ধান ক্রয় করবো না।

পিএনএস/এসআইআর

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন