বাতিল হচ্ছে ৫০৮ মাদরাসার পাঠদান

  16-01-2017 09:10AM

পিএনএস ডেস্ক: বিতর্কিত ৫০৮ মাদরাসার পাঠদান অনুমোদন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফল বিপর্যয়, শিক্ষার্থী ভর্তি হতে অনিচ্ছুকসহ নানা কারণে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গত ১০ জানুয়ারি এসব মাদরাসা সুপারদের কারণ দর্শিয়ে পত্র দিয়েছে মাদরাসা অধিদফতর। পত্রে ৯ ফ্রেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হলেই চূড়ান্তভাবে অনুমোদন বাতিল হবে।

বিষয়টি স্বীকার করে মাদরাসা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, শুধু ফল বিপর্যয় ও কম শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার কারণেই নোটিশ দেয়া হয়নি। শিক্ষার গুনগত মান নিশ্চিতে ফলাফলে পিছিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানকে আরো ভাল করতে সতর্ক নোটিশ দেয়া হয়েছে।

নোটিশ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ সালে দাখিলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের রবিউল আউয়াল দাখিল মাদরাসা থেকে মাত্র ৫ শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করে ২ জন। একই জেলার নওদা খারারা নেছারিয়া দারুচ্চুন্নাত দাখিল মাদরাসা থেকে ৪ জন অংশ নিয়ে পাস করে ২ শিক্ষার্থী। লালমনিরহাটের বদশাহ দারুচ্চুন্নাহ দাখিল মাদরাসা থেকে ৩ জন অংশ নিয়ে ১ শিক্ষার্থী পাস করেছে। রাতিপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে ২ শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১ জন। একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পরেনি এমন মাদরাসাও রয়েছে। এভাবে সারাদেশে অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাখিলে ফল বিপর্যয় হয়েছে। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ সরকার প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে। এসব প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তি এবং পাঠদানের অনুমোতি নিতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে।

আবার অনেক আমলাও শিক্ষানুরাগী হতে নিজ এলাকায় মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু বছরের পর বছর ফল বিপর্যয় ঘটছে। সন্তোষজনক হারে শিক্ষার্থীও ভর্তি হচ্ছে না। এসব কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভূঁইফোড় মাদরাসা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে।

কারণ দর্শানো পত্রে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে প্রতি বছর বিপুল অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে জাতীয় স্কেলে ২০১৫ অনুযায়ী শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণ করা হয়েছে। অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদেরও যথাযোগ্য সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এর পরেও দাখিলে ফল বিপর্যয় ও কম শিক্ষার্থী ভর্তি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মাদরাসা এবং মাদরাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যেসব মাদরাসা থেকে ২০১৬ সালে দাখিলে ১০ জনের কম শিক্ষার্থীর অংশ গ্রহণ করেছে, পাসের হার ৫০ ভাগের নিচে, ৯ জনের কম শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে এ ধরনের ৫০৮ মাদরাসাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।

পত্রে মাদরাসাগুলোর শ্রেণি ভিত্তিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা, ২০১৬ সালের দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী কম কেন? বিগত তিন বছরের দাখিলের ফল, মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা, প্রতি বছর শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য সরকারি আর্থিক অনুদান/ সরকারি বেতন-ভাতাদি বাবদ ব্যয় এসব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে উল্লেখিত তথ্যের ব্যাখসহ কারণ দর্শানোর নোটিশের জাবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ২৩ নভেম্বর শিক্ষামন্ত্রণালয় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদানের অনুমতির পর শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের অনুমোদন বাতিল এবং ২০১৬ সালে এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের এমপিও এবং পাঠদানের অনুমোতি বাতিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে মাউশি ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরিপত্র জারি করে।

সুত্র: জাগো নিউজ


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন