পুলিশের ভুল, খেসারত দিচ্ছে নিরপরাধ ছাত্র

  22-01-2017 09:37PM

পিএনএস: ভাংচুর ও চুরির ঘটনায় মামলা হয় ছাত্রলীগের ১১ নেতার বিরুদ্ধে। এতে ১১ নম্বর আসামি হিসেবে উল্লেখ ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম জিমেলের নাম। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত না থেকেও শুধুমাত্র নামে মিল থাকায় মামলার বোঝা টানছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম জিসান।

ঘটনাটি ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবরের। এদিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে ক্যাম্পাসের আবদুর রব হলের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ‘বাংলার মুখ’ পক্ষের নেতাকর্মীরা কুপিয়ে জখম করে একই শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি তাইফুল হক তপুকে। এর ঘণ্টা চারেক পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই সহ সভাপতি মো.মামুন ও মো. নাজিম, পাঠাগার সম্পাদক আবু বকর, অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর বাসায় ভাঙচুর করা হয়।

এ ঘটনার তিন দিন পর অর্থ্যাৎ ওই বছরের নভেম্বর ২ তারিখ প্রয়াত দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে হাটহাজারী থানায় ১১ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এতে ১১ নম্বর আসামি হিসেবে উল্লেখ ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের চতুর্খ বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম জিমেলের নাম। কিন্তু ওই বর্ষে আরেক শিক্ষার্থী নাম ছিল তৌহিদুল ইসলাম জিসান। পরে মামলায় ভুলে ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম জিমেলের পরিবর্তে তৌহিদুল সাধারণ শিক্ষার্থ তৌহিদুল ইসলাম জিসানের নাম অর্ন্তভুক্ত হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম জিসান বলেন, ’চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি ফেনীতে অবস্থিত আমার বাড়িতে পুলিশ যায় তথ্য যাচাই করতে। পুলিশ আমার পরিবারকে জানায় যে, আমার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেটি তদন্ত করতে তারা সেখানে গেছেন।’

‘পরে আম্মু বিষয়টি আমাকে মুঠোফোনে জানালে, আমি আশ্চর্য হই। এই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত না।’ যোগ করেন জিসান।

মামলার বাদি জাহেদা আমিন চৌধুরীর বড় মেয়ে অ্যাডভোকেট জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাসায় ভাংচুর ও চুরির ঘটনায় ওই সময়ে আমার মায়ের করা মামলার ১১ নম্বর আসামি করা হয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম জিমেলকে। তৌহিদুল ইসলাম জিসান নামে কাউকে আমরা মামলায় ‍আসামি হিসেবে নাম দিইনি।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাটহাজারী খানার উপ-পরিদর্শক জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি কোখাও হয়তো ভুল হয়েছে। জিমেলের জায়গায় কোনো কারণে জিসান হয়ে গেছে। আমি বিষয়টি সমাধান করে দেব।’

এদিকে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জাহেদা আমিন চৌধুরীর করা মামলার এজাহারে ১১ নম্বর আসামি হিসেবে নাম ছিল ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম জিমেলের। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো না কোনো কারণে তৌহিদুল ইসলাম জিসানের নাম চলে আসে।

তবে ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো কিছু জানি না। মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কেউ কোনো তথ্য আমার কাছ থেকে নেন নি।’
তাই এটা কি ভুলঃবশত না ইচ্ছেকৃত সেই বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেল।


পিএনএস/বাকিবিল্লাহ্

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন