‘শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ করতে হবে’

  19-04-2017 08:13PM

পিএনএস ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি এডভোকেট মোঃ আব্দুল হামিদ বলেন, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ করতে হবে। বাণিজ্যিকীকরণ শিক্ষার গুণগত মানকে ব্যাহত করে। অনেক ক্ষেত্রে মেধা বিকাশের পথকে বাধাগ্রস্থ করে।

বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন পুরাতন খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

এসময় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইমেরিটাস প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। তারপরই রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর কর্তৃক ডিগ্রি ও স্বর্ণপদক প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ আজ সমৃদ্ধির সোপানে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ আজ নিম্ন আয়ের স্তর থেকে নিম্ন মধ্য আয়ের কাতারে উন্নীত হয়েছে। পদ্ধা সেতু আজ স্বপ্ন নয়, তা বাস্তবতা। বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীর বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, জঙ্গিবাদ দমন, ক্ষুধা দারিদ্র দুরীকরন সহ আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে। দেশকে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে রুপকল্প ২০২১ এবং রুপকল্প ২০৪১ অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সফলভাবে। সাফল্যের ধারাকে অব্যাহত রাখতে বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে রুপান্তরিত করতে হবে বলে জানান তিনি।

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে মর্যাদা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর ঐকান্তিক চেষ্টায় ১৯৭২ সালের ২৪ মে কাজী নজরুল ইসলামকে ভারত থেকে বাংলাদেশ নিয়ে আসা হয়। তখন বঙ্গবন্ধু কবি ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য ধানমন্ডিতে বাড়ি বরাদ্দ দেন। যে বাড়িটি কবি ভবন নামে পরিচিত।

সমাবর্তনের বক্তব্যের বাইরে গিয়ে রাষ্ট্রপতি হাস্যরসাত্বক করে বলেন, ভিসি আমাকে বলেছেন এর বাইরে কিছু বক্তব্য দিতে। এজন্য মনে রঙ লাগে। কিন্তু আমার মনে আসলে রঙ নাই। আমি হলাম বৃহত্তর ময়মনসিংহের হাওড় এলাকার লোক। এখানে বাতাস, দিনের গর্জন, বৃষ্টি এসব কারণে আমার মন চুপসে গেছে।

হাওড় এলাকা সম্পর্কে তিনি বলেন, গত ১৬ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা আমি ঘুড়ে দেখেছি। সেসব এলাকার ফসল প্রায় ১২ আনাই ধ্বংস হয়ে গেছে। এমনকি ধানের সাথে মাছও পঁচে যাচ্ছে। এই বৃষ্টি বাতাসে হাওড় এলাকার এখন বাকী ফসলও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণেই রঙ মিশিয়ে কথা বলার মানসিক অবস্থা আমার নাই। তাই দয়া করে বৈশাখের শুরু এবং চৈত্র মাসের শেষে কোন ধরনের সমাবর্তন রাখবেন না। শীকালকে বেছে নিবেন।

সমাবর্তনে ১ হাজার ৮শ' ৪৫ জনকে গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করেন এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ২৯ জন শিক্ষার্থীকে ৩২ টি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। প্রথম সমাবর্তনের ঘোষণা আসার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসবের উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে। সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় পুরো ক্যাম্পাস।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ৯ মে’, দুখু মিয়ার স্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহ শহরের অদূরে ত্রিশালে প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। এ শিক্ষালয়টি দেখতে দেখতে ১১ বছরে পা রাখলো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এটিই প্রথম সমাবর্তন।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন