রাবিতে শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের মারধর

  04-07-2018 04:21PM

পিএনএস, রাবি প্রতিনিধি : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে ‘ডাইনী' কটুক্তি করায় শিবির সন্দেহে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন চত্ত্বরে মারধরের এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার শেখ জসিম উদ্দিন বিজয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। কোটা সংস্কার আন্দোলনে তাকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেছে। বিজয় তার ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে ‘কটুক্তি’ করে ছড়া লিখেন- ‘ডাইনী ও ডাইনী, মা ডেকে আমরা তো কোনো দাম পাইনি। ডাইনী ও ডাইনী, এরকম আচরণ আমরা তো চাইনি।' মারধর করে পরে তাকে প্রক্টরে কাছে তুলে দেয়। মারধরের ফলে জসিমের মুখ ও ঠোঁট ফুলে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে আটকে রাখা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিজ বিভাগের টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় অংশ নেবার জন্য বুধবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে বিভাগে যাচ্ছিলেন বিজয়। সিনেট ভবনের সামনে আসলে তাকে আটক করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন তাকে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাস্টাসের কথা জিজ্ঞেস করে মারধর করা হয়। এসময় খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান সেখানে এগিয়ে গেলে বিজয়কে প্রক্টরের হাতে সোপর্দ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে প্রক্টর দপ্তরেই তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে ডাইনী বলে কটুক্তি করায় আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পারি তার সাথে শিবিরের সম্পৃক্ততা রয়েছে। পরে আমরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে দিয়ে দেই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘বিজয়কে প্রক্টর দপ্তরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে সে আমার দপ্তরে আছে। তবে তার নামে কোন মামলা দেওয়া হয়েছে কি বা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় নি সিদ্ধান্ত হলে পরে জানানো হবে।

এদিকে, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা বুধবার বেলা ১১টায় পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষনা দেয়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। এসময় প্রশাসন ভবনের সামনে আসা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সিনেট ভবন চত্ত্বরে নিয়ে মারধর করেছে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে বিজয়কে ছাড়া অন্য কাউকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন