ফাঁস হওয়া ফোনালাপের ব্যাখা

  02-10-2019 06:55AM



পিএনএস ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে এক চাকরিপ্রার্থীর স্ত্রীর সঙ্গে উপউপাচার্য ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার নিয়োগবাণিজ্যের ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে।

এই ফোনালাপ ফাঁসের পর গত সোমবার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি হয়ে গেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আলোচনার মূল বিষয়।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের অডিও রেকর্ডটি যুগান্তর অনলাইনসহ দেশের প্রায় সবক'টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

এবার চাকরিপ্রার্থীর স্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি এ প্রতিবাদ জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদটি বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে সংবাদমূল্য বহন করে। কিন্তু একটি ঘটনার আংশিক বা খণ্ডিত অংশ যাচাই না করে প্রচার বা প্রকাশ করা সত্যিই দুঃখজনক। কারণ এক্ষেত্রে সাধারণ পাঠক যেমন ভুল তথ্য পায়, তেমনি ঘটনাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গও সামাজিকভাবে মানহানিসহ অনেকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারি যে, হুদা অসাধু কিছু ব্যক্তির কবলে পড়ে আর্থিক লেনদেনে জড়িয়ে পড়েছে। এ রকম একটি লেনদেনের ডকুমেন্টও ১৩ নভেম্বর, ২০১৮ তারিখের চাকরির বোর্ডের আগে আমার নজরে আসে (নীলফামারীর সৈয়দপুর শাখার ইসলামী ব্যাংক লি: এর ০৪ নভেম্বর ২০১৮ তারিখের ৮০০০৭৩৯ ক্রমিকের একটি ব্যাংক জমা স্লিপ)। স্থানীয় অভিভাবক হিসেবে এহেন অসাধুকর্ম রোধকল্পে খোঁজ নেয়ার জন্য হুদার স্ত্রীকে ফোন দিয়েছিলাম। কারণ হুদার স্ত্রীর বাড়ি সৈয়দপুরে। হুদার স্ত্রী সে সময় ব্যাংক লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করেছিলেন, কিন্তু বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হয়নি।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপটি অসাধু ব্যক্তিদের সম্পর্কে একটি অধিকতর অনুসন্ধানী প্রয়াস ছিল মাত্র বলে বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়।

আরও দাবি করা হয়, সেই ফোনালাপের এডিট (সম্পাদন) করা অংশ প্রকাশ করা হয়েছে। যেকোনো এডিটিং সফটওয়্যারে পরীক্ষা করলেই জানা যাবে এটি সম্পাদিত ফোনালাপ যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করি। একই সঙ্গে আশা করি প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করে বস্তুনিষ্ট সংবাদের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচন করতে আপনারা সকলেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।

উল্লেখ্য, রাবিতে আরেকজন উপউপচার্য থাকলেও বর্তমান উপাচার্য ড. আব্দুস সোবহান তদবির করে চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়াকে দ্বিতীয় উপউপাচার্য নিয়োগ করেন।

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে চৌধুরী জাকারিয়ার সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীর স্ত্রীর ফোনালাপটি হুবহু স্ক্রিপ্ট আকারে তুলে দেয়া হলো-
উপউপাচার্য: হ্যাঁ, সাদিয়া। আমি প্রফেসর জাকারিয়া (চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া), প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর।
চাকরিপ্রত্যাশীর স্ত্রী: আসসালামু আলাইকুম স্যার।
উপউপাচার্য: ওয়ালাইকু আসসালাম। আচ্ছা মা, একটা কথা বলো তো, তোমরা কয় টাকা দেয়ার জন্য রেডি আছ।
চাকরিপ্রত্যাশীর স্ত্রী: স্যার, সত্যি কথা বলতে...
উপউপাচার্য: না না, সত্যি কথাই তো বলবা। ওপরে আল্লাহতায়ালা, নিচে আমি।
চাকরিপ্রত্যাশীর স্ত্রী: অবশ্যই, অবশ্যই। স্যার, আপনি যেহেতু তার অবস্থা জানেন, আরেকটা বিষয় এখানে স্যার, সেটা হচ্ছে- আপনি হুদার... মানে, এমনিতে সে কতটা স্ট্রিক..., আপনি বোধহয় এটাও জানেন স্যার, একটু রগচটা ছেলে।
উপউপাচার্য: আচ্ছা রাখো রাখো, এখান থেকে কথা বলা যাবে না।
চাকরিপ্রত্যাশীর স্ত্রীর সঙ্গে নিয়োগ নিয়ে দর-কষাকষির বিষয়ে জানতে চাইলে রাবির উপউপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘কী জানি, কোন মেয়ে কখন আসছে।
ওই নারীর সঙ্গে দর-কষাকষির বিষয়ে কথা বলেছেন এবং সেটা রেকর্ড হয়েছে বলে জানালে উপউপাচার্য জাকারিয়া আরও বলেন, ‘আমি মেয়েদের সঙ্গে কথা তো কমই বলি, টেলিফোনে আমি বলি যে, তোমার সঙ্গে দেখা করারও দরকার নেই, কথা বলারও দরকার নেই।

পিএনএস/ হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন