শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেতন মওকুফ চান অভিভাবকরা

  17-04-2020 09:25AM


পিএনএস ডেস্ক: করোনার কারণে রাজধানীর অনেক নিম্ন আয়ের পরিবারে চলছে দুর্দিন। বর্তমান অবস্থায় অনেকের আয় রোজগারের পথও প্রায় বন্ধ। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকলেও ছুটির পর সন্তানের বেতনের টাকার যোগান নিয়ে এখন থেকেই দুশ্চিন্তায় অনেকে। তারা স্কুল-কলেজের বেতন মওকুফের দাবি জানিয়েছেন। তবে করোনার মতো এমন ভয়াবহ দুর্যোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেদের আর্থিক সঙ্গতির সাথে শুধু বকেয়া বেতনের জরিমানার টাকা ছাড় দেয়ার বিষয়ে চিন্তা করছেন। অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে কথা বলে এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

এ দিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের কারণে ছুটির সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিলম্ব ফি’ ছাড়াই মাসিক বেতন আদায় করা করা হবে। বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বেতন পরিশোধে বিলম্ব হলে জরিমানা না নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজধানীর শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অন্য দিকে শুধু বেতনের জরিমানা মওকুফ নয় বরং পুরো বেতনই মওকুফর দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

করোনার কারণে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ এক মাস ধরেই ছুটি চলছে। গত ১৭ মার্চ থেকে এই ছুটি শুরু হয়েছে। তিন ধাপে এই ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পঞ্জিকা অনুযায়ী ২৫ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত রমজান, ঈদুল ফিতর, জুমাতুল বিদা, শবে কদর, বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটির বন্ধ। করোনা পরিস্থিতিতে এখনো নিশ্চিত বোঝা যাচ্ছে না যে, কবে নাগাদ সবকিছু স্বাভাবিক হবে, কবে চালু হবে শিক্ষপ্রতিষ্ঠান।

অন্য দিকে করোনার ছুটিতে দেশজুড়ে অচলাবস্থায় জীবনযাত্রার সঙ্গে সব পেশার মানুষের কমবেশি আয়-রোজগারে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। শিক্ষায় ব্যয়ের চেয়ে এই মুহূর্তে নিত্যপ্রয়োজন মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছেন মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। অনেক অভিভাবকদের দাবি করোনা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন মওকুফ করা হোক। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের বেতনের অর্থে পরিচালিত হয়, তারাও বিপাকে তাদের প্রাত্যহিক খরচ মেটানোয়। স্কুলের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা পরিশোধের কোনো উপায় নেই।

রাজধানীর সিদ্ধেশরী গালস স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: শাহাব উদ্দিন মোল্লা জানান, বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় করোনাকালে বেতন গ্রহণে বিলম্ব হলে অভিভাবকদের কাছ থেকে জরিমানা না নেয়ার সিদ্ধান্ত হবে পরিচালনা পর্ষদে।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহানআরা জানান, সাধারণত কোনো শিক্ষার্থী সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই অনুপস্থিত হলে জরিমানা করা হয়। এখন তো বিশেষ একটা দুর্যোগের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এই সময়টায় জরিমানা হবে না।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফৌজিয়া জানান, আমাদের স্কুলে দিনমজুরের সন্তানও পড়ে। এখন অনেকের আয়-রোজগার নেই। তাদের সন্তানদের আমরা পড়ালেখার জন্য তো সুযোগ দিতে হবে। দেরিতে বেতনে জরিমানা মওকুফ করার পাশাপাশি চাহিদাসম্পন্ন দরিদ্র শিক্ষার্থীর পরিবারের প্রতি কিছু করা যায় কি না, সেটাই ভাবছি।

এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) মো: বেলাল হোসাইন বলেন, বেতন মওকুফ করা হবে কি, হবে না- এই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেই। আমরা এখন টেলিভিশন এবং অনলাইনের ক্লাসগুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। বেতনের বিষয়ে হয়তো সিদ্ধান্ত আসতেও পারে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন