চলতি বছরেও চার পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা

  11-04-2021 09:42AM


পিএনএস ডেস্ক: করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে চলতি বছরেও বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে এসএসসি ও সমমানে পরীক্ষা নিয়েই বেশি শঙ্কায় রয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। কেননা ইতোমধ্যে এই পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণও স্থগিত হয়ে গেছে। আর পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে মাত্র ৬০ দিনের ক্লাসের যে রুটিন প্রকাশ করা হয়েছিল করোনার কারণে সেটির বাস্তবায়নও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে শেষতক চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হবে কি না সেটিও এখন নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারছেন না। তবে পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব না হলেও অটো পাসের পরিবর্তে একাধিক বিকল্প নিয়েও কাজ শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও করোনার কারণে ফলাফল প্রকাশে বেশ বিলম্ব হয়েছিল; কিন্তু এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। সেখানে সব শিক্ষার্থীকে দেয়া হয়েছিল অটো পাস। অন্য দিকে প্রাথমিকের পিইসি এবং মাধ্যমিকে জেএসসি পরীক্ষা না নিয়ে দেয়া হয় অটো পাস। যদিও এই অটো পাস নিয়ে বিভিন্ন মহলের মিশ্র প্রতিক্রিয়াও দেখা দিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের জীবন ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অটো পাসের বিকল্প কিছু তখন করাও যায়নি। তবে চলতি বছরের এই চার পাবলিক পরীক্ষার (পিইসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি) অটো পাস না দিয়ে বিকল্প ভাবছে সরকার। কেননা করোনার কারণে এ বছরের এসএসসির ৬০ দিনের ক্লাস পরিকল্পনা এবং এইচএসসি ৮৪ দিনের ক্লাস পরিকল্পনা নিয়েও হোঁচট খাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তাই অটো পাসের পরিবর্তে একাধিক বিকল্প নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ বছর যদি করোনার প্রকোপ না কমে বা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসে তাহলে এসএসসির ৬০ দিনের ক্লাস পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে এটাতে আরো কাটছাঁট করা হবে। একইভাবে এইচএসসির ৮৪ দিনের ক্ল¬াসের পরিকল্পনাকে সঙ্কুচিত করা হবে। আর শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ধরে রাখতে অনলাইন বা টিভি ক্লাসের মাধ্যমে পড়ালেখা চালিয়ে নেয়ার কাজটি অব্যাহত রাখা হবে।

অন্য দিকে পিইসি এবং জেএসসি পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে তাদেরকে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে সীমিত পরিসরে হলেও স্কুলে নিয়ে এসে পরীক্ষার আগে পরিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করা করা হবে। গত বছরের মতো গড়পড়তায় সব শিক্ষার্থীকে অটো পাস না দিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও প্রশ্নে পরীক্ষা নিয়ে পরের ক্লাসে উত্তীর্ণ করারও চিন্তা করা হচ্ছে।
যদিও করোনা পরিস্থিতি এবং ঘোষিত লকডাউনের খবরে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে একটি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কেননা করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী সপ্তাহ থেকে কঠোর লকডাউনের কথা ভাবছে সরকার। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাও গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে বা আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন সবার।

এর আগে শিক্ষা বোর্ডগুলো এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রের তালিকাও প্রকাশ করেছে। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে ছাপানোর জন্য বিজি প্রেসেও পাঠিয়েছে। তবে করোনার কারণে এসএসসির ফরম পূরণ স্থগিত করা হয়েছে। পরে নতুন সময়সূচি জানানো হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ ধরনের একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে পাবলিক পরীক্ষার বিকল্প খুঁজছে সরকার। আর তারই প্রস্তুতি হিসেবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জানিয়েছেন, সব প্রস্তুতি থাকার পরেও করোনার এই ঊর্ধ্বগতির কারণে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারছি না। আর এই পরিস্থিতিতে আমরা পাবলিক পরীক্ষা ও শ্রেণী পরীক্ষাও নেয়ার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছি না।

ফলে বাধ্য হয়েই আমরা স্কুল-কলেজ আবারো বন্ধ ঘোষণা করেছি। সে জন্য পড়ালেখা চালিয়ে যেতে বিকল্প উপায় খুঁজে পাওয়া যায় কি না বা সেটি খুঁজতে ১১ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে বিকল্প কোনো পথ বা পন্থা বের করা হবে বলেও জানান তিনি।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন