বন্ধের পথে গাজীপুরের সিনেমা হল

  28-10-2016 10:31PM


পিএনএস: এক সময় সিনেমা পাগল দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল গাজীপুরের সিনেমা হল গুলোতে। এখন দর্শক না থাকায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ওইসব সিনেমা হল। এতে হতাশায় দিন গুনছেন সিনেমা হল মালিকরা।

জেলা তথ্য অফিস ও সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরে ২০১১ সাল পর্যন্ত ১৮টি সিনেমা হল ছিল। এগুলো হলো চান্দনা, ঝুমুর, নন্দিতা, উল্কা, বর্ষা, বর্ষণ, চম্পাকলি, আনারকলি, ক্যাপ্রি, এরিণ, মোহনা, সাগর, আলোঘর, নাদিয়া, বনরুপা, শাপলা, চিত্রপুরী ও মনোরম।

গত ৫ বছরে এই ১৮ টি সিনেমা হলের মধ্যে প্রায় অর্ধেক বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো আছে সেগুলোও বন্ধ হওয়ার পথে। ঘরে ঘরে টেলিভিশন ডিস ও ইন্টারনেটের কারণে মানুষ এখন ঘরে বসেই সিনেমা দেখে। ফলে সিনেমা হলের দিকে আগ্রহ নেই মানুষের।

গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মো. একাব্বর হোসেন জানান, এক সময় কাজের ফাঁকে প্রায় প্রতিদিন গাজীপুরের মোহনা, চান্দনা, বর্ষা, উল্কা ও ঝুমুর সিনেমা হলে গিয়ে বাংলা ছবি দেখতাম। এখন সিনেমা হলের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। বাসায় বসে ডিস লাইন ও ইন্টারনেটে সব ধরণের ছবি দেখতে পাই। এখন সিনেমা হলে চলে অশ্লীল ছবি, পতিতাদের দিয়ে চলে দেহ ব্যবসা। এছাড়া সিনেমা হলের সামনে অশ্লীল পোস্টার লাগানো থাকে। যার কারণে পরিবারের লোকজন নিয়ে সিনেমা হলে যাওয়া যায় না। ফলে এখন সিনেমা হলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।

গাজীপুরের আরেক বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের সিনেমাগুলোর কাহিনী এখন ভাল লাগে না। বাংলাদেশের ছবির চেয়ে ভারতের ছবিগুলো অনেক ভাল লাগে। এছাড়া আমাদের দেশের সিনেমা হলের পর্দাও অনেক খারাপ, পরিষ্কার ছবি দেখা যায় না। আগে সিনেমা হলের ছবি দেখতে লাইন ধরে টিকিট কাটতে হতো। এখন ডেকেও সিনেমা হলে দর্শক পাওয়া যায় না। সিনেমা হলের অবস্থান আগের জায়গায় নিতে হলে সিনেমা হলের পরিবেশ ভাল করতে হবে, ভাল মানের ছবি, হলের পর্দা উন্নত থাকলে হয়তো দর্শক আবার সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখবে।

মৌচাক মোহনা সিনেমা হলের কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, এখন ঘরে ঘরে টেলিভিশন থাকায় মানুষ সিনেমা হলে আসে না। ঘরে বসেই মানুষ এখন সকল ছবি দেখে। এছাড়া সিনেমা হলে ছবি চলার আগেই তা টেলিভিশন, ডিশ ও ইন্টারনেটে দেখতে পাওয়া যায়। যার ফলে মানুষ এখন সিনেমা হলে আসে না। এছাড়া ছবির মানও তেমন ভাল হয় না। দর্শক না থাকায় সিনেমা হল মালিকরা এখন হতাশার মধ্যে রয়েছে। সিনেমা হল চালিয়ে স্টাফদের বেতন দেওয়া যায় না। লোকসানে রয়েছে সিনেমা হল মালিকরা।

গাজীপুর জেলা তথ্য অফিসার রাহাত হাসনাত জানান, বর্তমানে গাজীপুরে ৮-১০টি সিনেমা হল ছাড়া বাকিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো চলছে এগুলোও ধীরে ধীরে বন্ধ হওয়ার পথে। বাংলাদেশি ছবির প্রতি মানুষের অনীহা দেখা যাচ্ছে।



পিএনএস/বাকিবিল্লাহ্

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন