আদনান সামির ওজন কমানোর গল্প

  09-12-2016 02:34AM


পিএনএস ডেস্ক : আদনান সামি ১৯৮৯ সালের কথা, আদনান সামির তখন ২৩০ কেজি ওজন। হুট করে বাবার ক্যানসার রোগ দেখা দিল। বাবাকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে দেখাতে নিয়ে গেলে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় বাবা ছেলেকে আদেশ দিলেন, নিজেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে। সেদিনের বাধ্য ছেলে আদনান বাবার কথা শুনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। চিকিৎসকেরা সেদিন জানান, এখনই ওজন কমাতে হবে, না হলে বেশি দিন বাঁচা অসম্ভব।
সেদিন বাবা বলেছিলেন, ছেলের মৃত্যু দেখা তাঁর পক্ষে সম্ভব না। শরীর কমাতে পরামর্শ দেন বাবা। ২০০৯-এ তাতেই মারা যান তিনি। তবে তার আগে বাবার কথা রেখেছেন ছেলে। এরপরই ২৩০ কেজির পাহাড়প্রমাণ ওজন ঝরাতে বদ্ধপরিকর হন তিনি। ৬ বছরে কমিয়ে ফেলেন ১৬০ কেজি। আদনান বিশ্বাস করেন, ওজন কমাতে গেলে মানসিক শক্তিটাই আসল। বিষয়টা ৮০ শতাংশ মানসিক এবং ২০ শতাংশ শারীরিক।
বর্তমানে ভারতীয় নাগরিক সামি বলেন, চিকিৎসকের কথা শোনার পরই ওজন কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। ২০০৬ সালের ৬ জুন, বড় এক টুকরো চিজ কেক, সেদ্ধ আলু আর মাখনে মোড়া বিফ স্টেক খেয়ে প্রতিজ্ঞা করে আদনান সামি বলেন, ‘এই শেষ, এখন থেকে শুরু হলো নতুন অধ্যায়।’ ২০০৬ সালের ৭ জুন থেকে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের শরণাপন্ন হয়ে লো কার্ব হাইপ্রোটিন (অল্প শর্করা বেশি আমিষ) ডায়েট শুরু করেন আদনান সামি। সেই সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়ামও করতে থাকেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে আদনান সামি বলেন, ‘ডায়েট শুরুর পরের মাস থেকেই আমি দারুণ ফল পেতে শুরু করি। যদিও আমার দ্রুত ওজন কমানোর এই প্রক্রিয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কিন্তু বিষয়টি যেহেতু আমাকে ‘ডু অর ডাই’ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল, তাই আমাকে এটা বাধ্য হয়েই করতে হয়েছে।’
সাধারণত কম সময়ে ওজন কমাতে হলে অনেকে ব্যায়াম আর ডায়েটের পাশাপাশি ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি করেন অনেকে। এর মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু কম সময়ে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সামি নাকি এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেননি। তিনি ডায়েট আর ব্যায়ামনির্ভর ছিলেন।
সবশেষে ১১ মাসে আদনান সামির ওজন ২৩০ কেজি থেকে ৮৫-তে নামিয়ে আনেন। তিনি জানান, গড়ে তাঁর ওজন প্রতি মাসে ১০ কেজি করে কমাতে হয়েছে। এখনো আদনান সামি ডায়েট মেনে খাওয়াদাওয়া করেন, ব্যায়াম করেন। এখন নিজেই বোঝেন পরিমিতিবোধ কতটা জরুরি তাঁর জন্য। সেই সঙ্গে জরুরি নিয়মিত ব্যায়ামটাও।
সূত্র: ইন্ডিয়া মেডিক্যালটাইমস

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন