সানি বিড়ম্বনায় ভারতের প্রশাসন, ভাবলেই শিউরে উঠছি!!

  22-04-2017 04:58PM

পিএনএস ডেস্ক : বার্তাটা রটে যেতে বেশি দেরি হয়নি। হোয়াটসঅ্যাপে টুং টাং, ‘তেহট্টে সানি লিওন!’পাল্টা উত্তর এসেছে, ‘কী বলছিস! কলকাতায় একবার এসেছিল বলে শুনেছিলাম। তাই বলে তেহট্টে!’
কেউ ফোন করে বলেছেন, ‘নদিয়ার ওয়েবসাইট খুলে তেহট্টে ১ ব্লকে ক্লিক কর। তাহলেই ম্যাজিক দেখতে পাবি।’

ফোনে-ফোনে, কানে-কানে কথাটা পৌঁছয় প্রশাসনের কানেও। কী বিড়ম্বনা! সরকারি ওয়েবসাইটে শোভা পাচ্ছে অভিনেত্রী সানি লিওনের ছবি ও ভিডিও! প্রশাসনের কর্তাদের তৎপরতায় শেষতক শুক্রবার বিকেলে ব্লকের ওয়েবসাইট থেকে সানিকে বিদায় জানানো হয়।

কপালের ঘাম মুছে ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘উফ, দিনভর যা চলল ভাবলেই শিউরে উঠছি। এমনিতেই কাজের চাপ রয়েছে। ঝামেলার শেষ নেই। তার মধ্যে সানি লিওনও যে এ ভাবে বিপাকে ফেলবে কে জানত!’’

যাঁরা দেরিতে খবরটা পেয়েছেন তাঁরা অবশ্য বিকেলে ব্লকের ওয়েবসাইট খুলে হতাশ হয়েছেন। ততক্ষণে সানি লিওন তেহট্ট ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে না অন্য ব্লকের লিঙ্কগুলোও। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘দাঁড়ান মশাই। একটা ব্লকে সানি লিওন পাওয়া গিয়েছিল। অন্যগুলোয় আরও কী লুকিয়ে আছে কে জানে! ভাল করে পরীক্ষা করে দেখার পরে ফের সেগুলো ফিরিয়ে আনা হবে।’’
বছর পাঁচেক আগে সাধারণ মানুষ যাতে সহজে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন তার জন্য ওয়েবসাইট খুলেছিলেন তেহট্ট ১ ব্লক কর্তৃপক্ষ। অন্যান্য ব্লকের মতোই জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটের সঙ্গে ‘লিঙ্ক’ করে দেওয়া হয় এই ব্লকের ওয়েবসাইট।

তার পর বছর দুয়েক ঠিকঠাক চলেছিল। কিন্তু পরে পুনর্নবীকরণ না করানোয় ওয়েবসাইটটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। কিন্তু সেই বিষয়ে ব্লক থেকে জেলা প্রশাসনকে কিছু না জানানোয় এত দিন ওই অবস্থাতেই ছিল। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জানাজানি হয়, জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইট মারফত তেহট্ট ১ ব্লকের ওয়েবসাইট খুললেই ভেসে উঠছে সানি লিওনের ছবি আর ভিডিও।

বিষয়টি জানাজানি হতেই হইচই পড়ে যায় জেলা প্রশাসন কর্তাদের মধ্যে। দ্রুত তেহট্ট ১ ব্লকের ওয়েবসাইট সরিয়ে নেওয়া হয়। ডাক পড়ে ন্যাশনাল ইনফরমেটিভ সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিক সুরত মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলছেন, “ওয়েবসাইটটা যে নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে সেটা আমাদের জানাননি ব্লক কর্তৃপক্ষ। জানালে এমন ঘটনাও ঘটত না।’’

তেহট্ট ১ বিডিও জাহাঙ্গির মল্লিক বলেন, “যে সংস্থার মাধ্যমে ওয়েবসাইটটা তৈরি করা হয়েছিল পরে তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। সেই কারণেই তিন বছর ধরে সেটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে আছে।” বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়নি কেন? সে প্রশ্নের অবশ্য কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। শুধু বলেন, “এই ঘটনায় আমরা অত্যন্ত দুঃখিত।”

জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “কী ভাবে এমনটা হল তা-ও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ব্লকের ওই ওয়েবসাইটটি কোনও ভাবে হ্যাক করা হয়েছে। কারা এই কীর্তি করেছে তা জানার চেষ্টা চলছে।”


পিএনএস : জে এ মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন