ভালোবেসে স্ত্রীকে যে নামে ডাকতেন রাজ্জাক

  22-08-2017 01:07AM

পিএনএস ডেস্ক: বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক আর নেই। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

এর আগে রাজধানীর গুলশানে তার নিজ বাসা লক্ষ্মীকুঞ্জে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে বুকের ব্যথা অনুভব হলে তিনি নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে হাসপাতালে যান। হাসপাতালে পৌঁছলে তাকে ইমারজেন্সিতে নেয়া হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে শেষবারের মত দেখতে হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন অসংখ্য গুণগ্রাহী ও ভক্তরা।

আকবর হোসেন ও নেসারুন্নেসার আদরের ছেলে রাজ্জাক তার স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতেন। স্ত্রী খায়রুন্নেসাকে লক্ষ্মী বলে ডাকতেন রাজ্জাক। ষাটের দশকের মাঝের দিকে চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন নায়করাজ রাজ্জাক। ষাটের দশকের বাকি বছরগুলো এবং সত্তরের দশকেও তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

রাজ্জাক পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় অভিনয়ে পা রাখেন। তার গেম টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাকে বেছে নেন নায়ক হিসেবে। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক বিদ্রোহীতে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যদিয়েই অভিনয়ে সম্পৃক্ততা হয় তার।

অভিনেতা হওয়ার মানসে ১৯৬১ সালে কলকাতা থেকে মুম্বাই পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি; সেখানে সফল না হয়ে শূন্য হাতে ফিরেছিলেন টালিগঞ্জে। ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসেন তিনি। প্রথমদিকে রাজ্জাক তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে ঘরোয়া নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি আব্দুল জব্বার খানের সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান।

সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগার লেন চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক। পরবর্তীতে কার বউ, ডাক বাবু, আখেরী স্টেশনসহ আরও বেশ ক`টি ছবিতে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয়ও করেন। পরে বেহুলা চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক হিসেবে ঢালিউডে উপস্থিত হন সদর্পে। তিনি প্রায় ৩০০টি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র।

নায়করাজ রাজ্জাক প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন ‘কি যে করি’ ছবিতে অভিনয় করে। এরপর আরও চারবার তিনি জাতীয় সম্মাননা পান। ২০১১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার পেয়েছেন অসংখ্যবার। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করেন তিনি।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন