মোমের আলো

  19-10-2017 11:08AM

পিএনএস ডেস্ক: ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে ‘মুসাফির’ নামে একটি হিন্দি মুভি মুক্তি পেয়েছিল। এর প্রধান চরিত্রে ছিলেন দিলীপকুমার, কিশোরকুমার, সুচিত্রা সেন, নিরুপা রায়। পরিচালক হৃষিকেশ মুখার্জি, সঙ্গীত পরিচালক সলিল চৌধুরী এবং কাহিনী রচনায় যৌথভাবে ঋত্বিক ঘটক ও হৃষিকেশ মুখার্জি।

আমি এই মুভি বা সিনেমাটি দেখিনি, কেবল এর বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম। আমরা তখন কুষ্টিয়ার পোড়াদহে থাকি, সেবার ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছি। আমার দুই বন্ধু ছিল অমল আর বিমল, কাকাতো - জ্যাঠাতো ভাই। ওরা মাঝে মাঝে কলকাতা যেতো আর ফেরার সময় নতুন- পুরনো মিলিয়ে কয়েক সংখ্যা করে উল্টারথ, সিনেমাজগৎ আর ফিল্মফেয়ারের মতো সিনেমা পত্রিকা নিয়ে আসতো।

ওদের পড়া আর ছবি দেখা হয়ে গেলে সেগুলি আমার হাতে আসতো। তো সেই তখনই মুসাফির সিনেমার মুক্তি উপলক্ষে ফিল্মফেয়ার পত্রিকার দ্বিতীয় প্রচ্ছদে নায়ক- নায়িকাদের ছবিসহ একটি বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছিল। আমি সিনেমার কাহিনী সম্পর্কে কিছু জানি না, তবে বিজ্ঞাপনের ভাষায় নায়কের মুখের কটি কথায় কিছুটা আন্দাজ করা যায়।

ছবিতে দুই প্রান্তে জ্বলতে থাকা একটি মোমবাতির নিচে ইংরেজিতে লেখা কথাগুলি এখনও মনে আছে - My candle burns at both ends, it will not last the night. But oh! my friends and ah! my foes - it gives a lovely light. অর্থ তো আপনারা জেনেই গেছেন - একটা মোমের দুই দিকে একসঙ্গে জ্বালালে রাতভর জ্বলবে না, তবে যতক্ষণ জ্বলবে,আমার মিত্র এবং শত্রু সবার জন্যেই উজ্জ্বল আলো দেবে।

হাতের কাছে লেখার মতো কিছু নেই বলেই হয়তো এই মুহূর্তে মুসাফির ছবির বিজ্ঞাপনটির কথা মনে পড়েছে। একটা প্রবাদ আছে - মানুষ বয়সের পরিমাপে নয়, বেঁচে থাকে তার কাজের মধ্যে দিয়ে। কেউ অকারণ একশো বছর বেঁচে থাকেন, পৃথিবীকে দেন না কিছুই। আবার কেউ বিশ- বাইশ বছরের স্বল্পায়ু জীবনেও এমন কিছু রেখে যান যা তাকে অমরত্ব দান করে।

একটা মোমবাতি জ্বালালে একসময় তো নিঃশেষ হয়ে যাবেই, কিন্তু যতক্ষণ জ্বলবে ততক্ষণ যদি চারপাশটা উজ্জ্বল আলোয় ভরিয়ে রাখে- সেই তো তার সাফল্য। আমিও তো জ্বলছি, কেবল সলতে পুড়ছে, এক চিলতে আলোরও দেখা নেই। এ কোনো জীবন হলো...।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন