এমন অঙ্গভঙ্গিতে ডাকছিলো যেন আমি ভাড়া করা দাসী!

  14-11-2018 11:09AM

পিএনএস ডেস্ক : মিটু নিয়ে বিশ্ব জুড়ে চলছে যখন তুমুল আলোড়ন। বিভিন্নভাবে যৌন হেনস্তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে মুখ খুলছেন একেরপর এক নারী। বাদ পড়ছেন না তারকারাও। এবার সেই দলে যোগ দিলেন পশ্চিমবঙ্গের কণ্ঠশিল্পী মেখলা দাশগুপ্ত।

সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে নিজের ভয়ঙ্কর কিছু অভিজ্ঞতার কথা জানান এই কণ্ঠশিল্পী। তিনি বলেন, ভয়। এই একটা অনুভূতিই গত কয়েকদিন ধরে আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। এত দিন ধরে গান গাইছি, বহু দূরে দূরে অনুষ্ঠান করি। কোনও দিন এমন হয়নি। গত শনিবার যে অভিজ্ঞতাটা হল, তা অনেকের সঙ্গেই হয়। কিন্তু আমি যেমন ফেসবুক লাইভে সবটা বলছি, সেটা বেশির ভাগ শিল্পী বলেন না।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, মেখলা দাশগুপ্ত বলেছেন, রাত ১০টা নাগাদ আমি স্টেজে উঠি। দর্শকদের অনেকে বাঁশের ব্যারিকেডের ওপর বসেছিলেন। অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাঁ দিকে কিছু দর্শক ছিলেন। যাঁদের প্রথম থেকেই দেখে ঠিক মনে হয়নি। আমি নিজের মতো গান গাইছিলাম। হঠাতই বলতে শুরু করেন, ‘‘এই ওকে নামিয়ে দে তো। এ সব গান শুনতে আসিনি। অ্যাই, নাচের গান কর।’’ তারা মাটিতে পা ঠুকতে থাকে। জড়ানো গলায়, মদ্যপ অবস্থায় এমন করতে শুরু করেন যে আমি ভয় পেয়ে যাই।

আমাকে বলা হয়েছিল, গান গাইতে গাইতে স্টেজ থেকে নেমে বাঁ-দিকে রেসপেক্টেড পুলিশ অফিসারদের কাছে নাচতে নাচতে যেতে। তাঁরা এমন অঙ্গভঙ্গিতে আমাকে ডাকছিলেন যেন আমি ওঁদের ভাড়া করা দাসী! যে অসভ্যতা হচ্ছিল, আমি বেশিক্ষণ গান গাইতে পারিনি।

সেদিন ফেরার সময় আয়োজকরাই আমাকে গাড়ি দিয়েছিল। অনুষ্ঠানে ঐ অসভ্যতা। তারপর হাইওয়ের ফাঁকা রাস্তায় ওদের ঠিক করে দেওয়া গাড়ি, ড্রাইভার— মনের যা অবস্থা, যা খুশি হতে পারে বলে মনে হচ্ছিল তখন।

আমার পারিশ্রমিকও পুরো পাইনি। আমি কোনও লিখিত অভিযোগ করিনি। কারণ, কী হবে অভিযোগ করে? নির্ভয়া কাণ্ডের কত দিন পর বিচার হল? আর আমার অভিযোগে কী হবে? আমি ফেসবুক লাইভ করেছি। কারণ, বহু শিল্পী এই সমস্যায় পড়েন। কিন্তু কেউ মুখ খোলেন না। সেটা সামনে আনতেই এটা করেছি।

তবে ভয়টা তাড়া করছে সব সময়। ভাবছি, কী করে বেরিয়ে এলাম ওখান থেকে। পুলিশের অনুষ্ঠানেই এই ঘটনা! ভয় হয় অন্য কোথাও আবার হবে না তো? এখনও আমি ওই ট্রমার থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন