সোমবার আমজাদ হোসেনের মরদেহ দেশে আনা হবে

  16-12-2018 07:12PM

পিএনএস ডেস্ক :কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা, গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার, অভিনয়শিল্পী এবং লেখক আমজাদ হোসেন গত শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মরদেহ ব্যাংকক থেকে দেশে কবে আনা হবে জানতে চাইলে মরহুমের বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল শনিবার জানিয়েছিলেন দ্রুতই আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। হয়তো রোববারই সম্ভব হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পারা যায়নি। আজ রোববার বিকেলে তিনি বলেন, এখানকার কিছু কাগজপত্রের ক্লিয়ারেন্সের জন্য একটু সময় লাগছে।

এছাড়া ব্যাংককে আজ সরকারি ছুটি থাকার কারণে কাজ সম্পন্ন করতে একটু অসুবিধাও হয়েছে। তাই আগামীকাল সোমবার সকালে এখানে সব কাজ শেষ করে দ্রুত ব্যাংকক থেকে বাবার মরদেহ দেশে আনার প্রস্তুতি নেয়া হবে। আশা করছি, সব ঠিক থাকলে আগামীকালই রাতের মধ্যে বাবার মরদেহ কার্গো বিমানের মাধ্যমে ঢাকায় আসবে।

এরপর ঢাকায় মোহাম্মদপুরের আদাবরের বাসার কাছে প্রথম জানাজা হবে। এরপর তার মরদেহ রাখা হবে বারডেম হাসপাতালে। সেখান থেকে মঙ্গলবার এফডিসি ও শহীদ মিনারে নেয়া হবে। এছাড়াও বাবার জন্মস্থান জামালপুরে আরেকটি জানাজা শেষে মায়ের ইচ্ছে অনুযায়ী ঢাকার মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া আকতারের ইচ্ছে তার স্বামীকে যেন মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। মায়ের ইচ্ছেতে ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল এবং সোহেল আরমানও সায় দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা, গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার, অভিনয়শিল্পী এবং লেখক আমজাদ হোসেন মৃত্যুকালে স্ত্রী, চার ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় গত ১৮ই নভেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আমজাদ হোসেনকে। হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শুরু থেকেই তাকে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়। বাংলাদেশের বরেণ্য এই নির্মাতার শারীরিক অসুস্থতার খবর শুনে হাসপাতালে ভর্তির তিন দিনের মাথায় তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমজাদ হোসেনের উন্নত চিকিৎসার খরচ বাবদ ২০ লাখ টাকা এবং এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া বাবদ ২২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা পরিবারের হাতে তুলে দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় আমজাদ হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক নেওয়া হয়। ২৭শে নভেম্বর মধ্যরাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ব্যাংককে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি প্রখ্যাত নিউরোসার্জন টিরা ট্যাংভিরিয়াপাইবুনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

পরিচালক আমজাদ হোসেনের জনপ্রিয় ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘বড় বাড়ির মেয়ে’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’, ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি। ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়া তিনি আরও ১৪ বার জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন