গাড়ির মধ্যে নায়িকাকে ধর্ষণ করেন আদিত্য পাঞ্চোলি

  04-07-2019 10:50AM

পিএনএস ডেস্ক : আপাতত স্বস্তি আদিত্য পাঞ্চোলির। একটি ধর্ষণের মামলায় মঙ্গলবার মুম্বাই সিটি সিভিল সেশন কোর্ট তাকে অন্তর্বর্তী জামিন দেয়। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৯ জুলাই। এক অভিনেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সম্প্রতি আটক করা হয় তাকে।

বলিউডের প্রথম সারির ওই অভিনেত্রীর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ১৭ বছর বয়সে তিনি ধর্ষিতা হন। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে আদিত্যর আইনজীবী বলেন, ১৫ বছর পর এই অভিযোগ করার কোনও অর্থ হয় না।

মুম্বাইয়ের ভরসোভা থানায় আড়াই পাতার একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বলিউডের প্রথম সারির এই অভিনেত্রী। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০০৪ সালে অনেক স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাইয়ে পা রাখেন। বয়স ছিল ১৭ বছর। মেয়েদের একটি হোস্টেলে থাকতেন। সেই বছরই তার পরিচয় হয় আদিত্যর সঙ্গে। তখন তার বয়স প্রায় ৩৮। বিবাহিত আদিত্যর তখন দু’টি সন্তান ছিল।

অভিনেত্রী লিখেছেন, সেই সময় আদিত্য পাঞ্চোলির সঙ্গে একটি পার্টিতে যান। একটি পনীয় খাওয়ার পরই তার ঝিমুনি শুরু হয়। পার্টি শেষ হওয়ার পর আদিত্য পাঞ্চোলি তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সেই মতো তারা দু’জনে গাড়িতে ওঠেন। ইয়ারি রোডের কোনও একটি জায়গায় গাড়ি থামিয়ে দেন আদিত্য। এর পর ধর্ষণ করেন অভিনেত্রীকে। এমনকি সেই অবস্থায় অভিনেত্রীর ছবিও তুলে রাখেন আদিত্য। ছবি তুলে রাখার বিষয়টি তিনি জানতেনও না।



পরের বার যখন দু'জনের দেখা হয়, আদিত্য অভিনেত্রীকে বলেন তাদের স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্কে থাকা উচিত। অভিনেত্রী তাকে বলেন, আদিত্য তার বাবার বয়সী। তিনি এমন একজনকে বিয়ে করতে চান যে তার বয়সের। তারপরই আদিত্য তাকে গাড়িতে ধর্ষণ করার পর যে ছবিগুলি তুলে রেখেছিলেন সেগুলি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে থাকেন। বলেন, ছবিগুলি সবাইকে দেখিয়ে দেবেন।

অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি তখন অল্প বয়সী, মুম্বাইয়ে কাউকে চিনতেন না। সেই সুযোগ নেন আদিত্য।

অভিনেত্রী তার অভিযোগে আরও জানিয়েছেন, ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন জায়গায় রেখেছিলেন আদিত্য। প্রতিবার অভিনেত্রীর অজান্তে পানীয়র সঙ্গে মাদক মিশিয়ে ধর্ষণ করতেন আদিত্য। ছবিও তুলে রাখতেন পরে ব্ল্যাকমেল করার জন্য।

একদিন সহ্য করতে না পেরে এক সিনিয়র আইপিএস অফিসারের কাছে অভিযোগ জানান অভিনেত্রী। যদিও কোনো লাভ হয়নি।

তিনি বলেন, সেই খবর জানতে পেরে একদিন রাস্তায় তাকে দাঁড় করিয়ে হেনস্তা করেন আদিত্য পাঞ্চোলি। বারবার ফ্ল্যাট বদলেও লাভ হয়নি। ব্ল্যাকমেল করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পাশাপাশি তার কাছ থেকে কয়েক দফায় টাকা নিয়েছিলেন আদিত্য। টাকা না দিয়ে ছবিগুলো প্রকাশ করে সিনেমা ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়ার হুমকি দিতেন।

গত ২৮ জুন দায়ের করা এই অভিযোগের ভিত্তিতে মুম্বাই পুলিশ পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৩২৮ (অপরাধের উদ্দেশে বিষাক্ত পদার্থ প্রয়োগ), ৩৮৪ (হুমকি দিয়ে টাকা আদায়)সহ একাধিক ধারায় মামলা করেছে।

অভিনেত্রীর বোনকে ‘অশ্লীল মেইল’ পাঠানোর অভিযোগে ১২ মে পাঞ্চোলির বক্তব্য রেকর্ড হয়। সেখানে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

পাঞ্চোলির আইনজীবী প্রশান্ত পাতিলের দাবি, তার মক্কেলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। অভিযোগকারিনী কেন ১৫ বছর চুপ ছিলেন? এতদিন পর অভিযোগ করার কী কারণ? মঙ্গলবার দায়রা আদালত আদিত্য পাঞ্চোলিকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন