প্রধানমন্ত্রীর কাছে সোহেল রানার দাবি!

  17-01-2021 03:39PM

পিএনএস ডেস্ক : বাংলা চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পেলেন অভিনেতা সোহেল রানা। রোববার (১৭ জানুয়ারি) সকালে আজীবন সম্মাননা ক্রেস্ট প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার হাতে তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

আজীবন সম্মাননা প্রাপ্তির পর প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্তদের জন্য বিশেষ স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, প্রযোজক ও চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। এ অভিনেতা বলেন, ‘জীবনের প্রথম পুরস্কার নিয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে। আজও ভেবেছিলাম প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কারটি নেব, যে কারণে ৬ মাস পরে বাসার বাইরে বের হয়েছি। এসে শুনলাম ওনার হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারছি না, তবু তিনি আমার সামনে আছেন, ওনাকে সালাম জানাচ্ছি।’

পুরস্কারপ্রাপ্তির পরও সোহেল রানার মনে একটা দুঃখবোধ কাজ করছে। বিষয়টি উল্লেখ করে সোহেল রানা বলেন—‘আমি যখন জানতে পারলাম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আমাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে, তখন আমার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হলো। হৃদয়ের মাঝখানে আমার মনে হলো একটা দুঃখবোধ চলে এলো। কিন্তু আমি বুঝে উঠতে পারলাম না সেই দুঃখবোধটা কেন! চলচ্চিত্র জগতে আমি গত ৪৬ বছর ধরে কাজ করছি, এ সময়ে এসে চলচ্চিত্র জগতে আমার যতটুকু পাওনা ছিল, আজ বোধহয় তার ইতি হয়ে গেল। সে কারণেই হয়তো দুঃখবোধটা।’

সম্মাননাটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি উৎসর্গ করে এই কিংবদন্তি অভিনেতা বলেন, ‘‘৪৯ বছর আগে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সিনেমা ‘ওরা ১১জন’ আমি প্রযোজনা করেছিলাম। হয়তো বঙ্গবন্ধু আমাকে স্নেহ করতেন, তাই তিনি সিনেমাটি দেখেছিলেন। ওই সময়ে আমি ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে যাই, তখন বঙ্গবন্ধু আমাকে বলেন, ‘ভালোই তো বানাইছস, এখানে থেকে যা।’ আমি সেই গুরুবাক্যকে চিরধার্য্য মনে করে চলচ্চিত্র জগতেই রয়ে গেলাম। এরপর দ্বিতীয় সিনেমা করলাম মাসুদ রানা এবং এরপর থেকে আমার ইতিহাস…।’’

সোহেল রানা আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যদি সেদিন না বলতেন, তুই চলচ্চিত্রে থেকে যা, আজকে সারা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর মানুষ আমাকে চিনতেন না। তাই আজকের এই দিনে আমি যে পুরস্কারটি পেয়েছি, তা জাতির পিতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, আমার শিক্ষা গুরু, আমার রাজনৈতিক গুরু, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে তার পায়ের কাছে সম্মাননাটি উৎসর্গ করলাম।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘প্রতিবছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্তদের ভিআইপি ঘোষণার দাবি জানাই। একই সঙ্গে অন্যান্য বিভাগে পুরস্কারপ্রাপ্তদেরকে সিআইপি ঘোষণা করা দরকার। এটা দুই বছরের জন্য হলেও। চলচ্চিত্রের সব ধরনের শিল্পী, পরিচালক ও কুশলীদের জন্য রেসনিং ব্যবস্থা করার অনুরোধ করছি। আপনি যদি নির্দেশ করেন, আমি মনে করি বিএফডিসির মহাব্যবস্থাপকের মাধ্যমে এটি করা হলে সাধারণ কোনো শিল্পী, কর্মচারী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত না খেয়ে মারা যাবেন না।’

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠান। এতে ২৫টি ক্যাটাগরিতে ৩১টি পুরস্কার প্রদান করা হয়। গণভবন থেকে অন্তর্জালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান, তথ্যসচিব খাজা মিয়া প্রমুখ।

পিএনএস/এসআইআর

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন