পিএনএস ডেস্ক : মায়ের দুধ শিশুর শ্রেষ্ঠ খাবার। পৃথিবীতে মায়ের দুধ খাওয়ানো সবচেয়ে প্রাচীন এবং শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি। আধুনিক সভ্যতায় মানুষ বদলে যাওয়ার পরও মায়ের দুধের শ্রেষ্ঠত্বের কথা প্রচার করতে হয়।
শিশুর জন্মের পর আধা ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। শিশুর প্রথম খাবার হলদে রঙের দুধ (কলোস্ট্রাম)। এ দুধ মায়ের স্তনে প্রসবের পরে প্রায় দু-তিন দিন থাকে। কলোস্ট্রামে নবজাতকের প্রয়োজনীয় পুষ্টি থাকে এবং এটা শিশুকে রোগ প্রতিরোধে শক্তি জোগায়। কলোস্ট্রাম শিশুর পেট (অন্ত্র) পরিষ্কার করে। মনে রাখতে হবে, প্রথম বুকের দুধ খাওয়ানোর আগে মায়ের স্তন ঈষৎ উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাবান ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ তাতে স্তনের বোঁটার মসৃণতা নষ্ট হয়ে যায়। স্তনে ঘা পর্যন্ত হতে পারে।
জন্মের পর পর শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। কারণ নবজাতক শিশু স্তন চোষার একটা প্রাকৃতিক ক্ষমতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। খুব তাড়াতাড়ি বুকের দুধ খেলে শিশুর চোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শিশু প্রথমেই বুকের দুধ না খেলে তার চোষণ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এমন কি সে মায়ের দুধের প্রতি আকর্ষণও হারাতে পারে।
বুকে দুধ কতক্ষণ পর পর খাওয়াতে হবে? এক সময় বলা হতো, নির্দিষ্ট সময় পর পর বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। আধুনিক গবেষণায় এখন বলা হচ্ছে, চাহিদা অনুযায়ী শিশু দুধ খাবে। মানে শিশু যখন চাবে, যতবার চাবে এবং যতক্ষণ খেতে চায় ততক্ষণই দুধ খাওয়াতে হবে। দুধ খাওয়ার জন্য শিশু কখনো কাঁদে, কখনো বেশ নড়াচড়া করে, কখনো আঙুল বা কাপড় চোষে ও কখনো ঘুম থেকে জেগে উঠে। অর্থাৎ যখন প্রয়োজন তখনই শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। তবে রাতে শিশুকে অন্তত দুবার বুকের দুধ দেয়া উচিত। বুকের দুধ খাওয়ানো কেন প্রয়োজন তা এক নজরে দেখা যাক :
১। মায়ের দুধই শিশুর শ্রেষ্ঠ খাবার। এ দুধ শিশুকে স্বাস্থ্যবান ও শক্তিশালী করে।
২। প্রসবের পর মায়ের রক্তক্ষরণ বন্ধে স্তন্য পান সাহায্য করে।
৩। মায়ের দুধ শিশুকে অসুস্থতা, যেমনÑডায়াবেটিস, পেটের অসুখ ও নিউমোনিয়ার মতো সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে।
৪। বুকের দুধ খাওয়ালে মায়ের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। অধিকন্তু মায়ের ওসটিওপোরোসিস বা অস্থি ভঙ্গুর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
৫। বুকের দুধ ছাড়া শিশুকে অন্য কোনো খাবার না খাওয়ালে মা দ্রুত গর্ভবতী হওয়া থেকে মুক্ত থাকেন।
পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম
মায়ের দুধ শিশুর জন্য শ্রেষ্ঠ
11-10-2016 07:02PM