নারীদের নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত ফলিক এসিড

  12-01-2017 02:40PM


পিএনএস ডেস্ক: ফলিক এসিড মূলত এক ধরনের ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। একে ভিটামিন ই-৯ বলা হয়।

গর্ভবতী নারীদের গর্ভের সন্তানের সুস্থতার জন্য ফলিক এসিড অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে গবেষকরা বলছেন, শুধু গর্ভবতী নারীদেরই নয়, গর্ভধারণের আগে থেকেই এটি নিয়মিত গ্রহণ করা উচিত। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

ফলিক এসিড ডিএনএ গঠন বা সিন্থেসাইজেশন, কোষ বিভাজন এবং ডিএনএ মেরামত করতে সাহায্য করে। এটি ক্রমাগত কোষ বিভাজন এবং কোষের বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তাই গর্ভাবস্থায় এবং নবজাতকদের জন্য ফলিক এসিড জরুরী। লোহিত রক্তকণিকা তৈরীর কাজে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে ফলিক এসিড শিশু ও পূর্ণ বয়স্ক উভয়েরই প্রয়োজন।

ফলিক এসিড পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন বলে চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনের মতো শরীরে মজুদ থাকার সুযোগ নেই। ফলে খাদ্যের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হয়। ফলিক এসিডকে ফোলেট নামেও অভিহিত করা হয়। সবুজ পাতাজাতীয় শাকসবজি, টক ফল ও ডাল জাতীয় খাবারে ফলিক এসিড প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকে।

তবে ফলিক এসিড যে সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। প্রাকৃতিক খাদ্যবস্তু গ্রহণের মাধ্যমে এর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ফলিক এসিড এবং ভিটামিন ই-৬ ও ই-১২ এর অভাবে শরীরে হোমোসিসটিন নামক এক ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থ মজুদ হতে থাকে। মানবদেহে হোমোসিসটিনের আধিক্য হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। রক্তনালির নমনীয়তা কমায়, যার ফলে রক্ত প্রবাহের বিঘ্ন ঘটার মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমা হওয়াকে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস বলা হয়। রক্তে হোমোসিসটিনের মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস বৃদ্ধির যোগসূত্র বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক এসিড গ্রহণের মাধ্যমে হোমোসিসটিনের মাত্রা স্বাভাবিক রেখে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

মাতৃগর্ভে মায়ের শরীরে ফলিক এসিডের ঘাটতি থাকলে শিশুর স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্ক গঠনে বড় ধরনের ত্রুটি দেখা দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি যেসব মা অতিরিক্ত ফলিক এসিড গ্রহণ করছেন তাদের গর্ভজাত শিশুদের মধ্যে স্নায়ুতন্ত্রের ও মস্তিষ্কের এসব ত্রুটি শতকরা ৬০ ভাগ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। আর এ কারণে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন ফলিক এসিড শুধু গর্ভবতী নারীদেরই নয়, গর্ভধারণের আগে থেকেই এটি খাদ্যতালিকায় সংযোজন করা উচিত।

সবুজ পাতা সমৃদ্ধ খাবার যেমন- পুঁইশাক, পাটশাক, মুলাশাক, সরিষা শাক, পেঁপে, লেবু, ব্রকলি, মটরশুঁটি, শিম, বরবটি, বাঁধাকপি, গাজর ইত্যাদি। আম, জাম, লিচু, কমলা, আঙ্গুর, স্ট্রবেরী ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের ডাল যেমন- মসুর, মুগ, মাষকালাই, বুটের ডাল ইত্যাদিতে ফলিক এসিড প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকে। এছাড়াও রয়েছে সরিষা, তিল, তিসি, সূর্যমুখীর বীজ, লাল চাল, লাল আট ইত্যাদি। গর্ভবতী নারীদের কিংবা গর্ভধারণের আগে থেকেই এসব খাবার খাওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন