মানুষ ও শুকরের শঙ্কর প্রাণীর জন্ম!

  30-01-2017 01:07PM

পিএনএস ডেস্ক: বিশ্বে এবারই প্রথম মানুষের কোষ দিয়ে শুকরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। সেটিও শুকরের ভ্রূণের মধ্যেই।এর ফলে, মানুষ আর শুকরের ‘শঙ্কর’ প্রজাতির প্রথম কোনো প্রাণীরও জন্ম হল। প্রাণীটির নাম দেওয়া হয়েছে- ‘শিমেরা’।

এবারই প্রথম এমন একটি ভ্রূণ বানাতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা, যার কোষের অনেকটা শুকরের হলেও, বাকিটা মানুষের! শুকরের ভ্রূণে বাইরে থেকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল মানুষের শরীরের (চামড়া থেকে নেওয়া) প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল। যে স্টেম সেল থেকে মানবশরীরের যে কোনও এলাকা বা অঙ্গের কোষ, কলা তৈরি করা যায়।

বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে দেখেছেন, মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি করতে পারে এমন কোষগুলি দিয়ে শুকরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গড়ে উঠেছে, সেটিও শুকরের ভ্রূণেই! মানুষের শরীরের প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেলগুলি শুকরের ভ্রূণের মধ্যে বেড়ে উঠে বেশ কয়েকটি কলা তৈরি করেছিল। ২৮ দিন পরই শুকরের ভ্রূণ থেকে মানুষের শরীরের প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেলগুলিকে বের করে নিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাই মানুষের কোষ থেকে যে ধরনের কলা তৈরি হয়, সেগুলি খুব বেশি পরিমাণে গড়ে ও বেড়ে উঠতে পারেনি শুকরের ভ্রূণে।

এর ফলে, বিশ্বে এই প্রথম মানুষ ও শুকরের ‘শঙ্কর প্রাণী’- ‘শিমেরা’র জন্ম হয়েছে। তবে তার চেয়েও যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হল- এর ফলে, এক দিন শুকরের বা অন্য কোনও প্রাণীর ভ্রূণের মধ্যেই মানুষের শরীরের কোষ, কলা দিয়ে কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বানানো সম্ভব হবে। যা আগামী দিনে মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অভাব মেটাতে পারবে বলে বিজ্ঞানীদের আশা।

সম্প্রতি গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সেল’-এ। বায়োলজিস্ট ইঝপিসুয়া বেলমঁতের নেতৃত্বে আমেরিকার সান দিয়েগোর ‘সাল্ক ইনস্টিটিউট অফ বায়োলজিক্যাল স্টাডিজ’ ও স্পেনের ‘ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি অফ মার্সিয়া’র একটি গবেষকদল এই অভূতপূর্ব গবেষণাটি করেছেন। গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছিল দেড় হাজার শুকরের ভ্রূণ। নেওয়া হয়েছিল ৪০ জন মানুষের শরীরের প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল।

গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের ভ্রূণের চেয়ে তিন গুণ দ্রুত বাড়ে শুকরের ভ্রূণ।

তবে এই গবেষণাটি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। অনেকের ধারণা, এভাবে যদি অনেক বেশি পরিমাণে মানুষের শরীরের ডিএনএ শুকরের ভ্রূণে প্রবেশ করে, তা হলে ভবিষ্যতে এমন শুকরের জন্ম হতে পারে, যার মগজ বা মস্তিষ্কটা হবে ঠিক মানুষের মতোই উন্নত! এছাড়াও মানুষের মুখের আদলে শুকরের জন্ম হবে!

‘হিউম্যান জেনেটিক্স অ্যালার্ট’-এর প্রধান ডেভিড কিং বলেন, ‘এই গবেষণার ফলাফলে খুবই বিব্রত বোধ করছি। উদ্বিগ্ন বোধ করছি। অশনি সংকেত দেখতে পাচ্ছি।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন