কম ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর!

  18-03-2017 02:51PM

পিএনএস ডেস্ক: অনেকে মনে করেন ঘুমানো মানে সময় নষ্ট। সেই সময়টা বরং একটু কাজ করে নিলে জীবনে অনেক উন্নতি করা যায়। এমন ভাবনা শুধু ভয়ঙ্কর নয়, শরীরের পক্ষে ক্ষতিকরও বটে। কারণ শরীর এবং মস্তিষ্ক তখনই ঠিক মতো কাজ করতে পারে, যখন পর্যাপ্ত রেস্ট পায়। আর তা না হলেই একে একে নানা রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করবে।

তাই তো চিকিৎসকেরা বলে থাকেন ঘুম হল মানুষের জন্য সব থেকে সুন্দর উপহার। এই উপহারকে যারা ঠিক মতো কদর করেন, তাদের শরীর, মন এবং মস্তিষ্ক এতটাই চাঙ্গা থাকে যে কোনও রোগই এদের ছুঁতে পারে না। সুতরাং বলা যায় না ঘুমলে উন্নতি সম্ভব নয়, বরং ঠিক মতো ঘুমলেই জীবন সুন্দর এবং সফল হয়ে ওঠে।

কিন্তু আজকের দুনিয়ায় সবাই এত ব্যস্ত যে ঘুমানের সময়ই নেই। পরিসংখ্যান বলছে গত কয়েক বছরে সারা বিশ্বেই অনিদ্রায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে ডায়াবেটিস, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া সহ একাধিক রোগের প্রকোপ। কারণ যেমনটা আগেও বলেছি শরীর যদি ঠিক মতো আরাম না পায়, তাহলে এক একে নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিক মতো কাজ করা বন্ধ করে দেয়, ফলে দেখা দেয় নানা রোগ।

প্রসঙ্গত, দিনে কম করে ৬-৮ ঘন্টা না ঘুমালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি ওজনও বাড়তে শুরু করে। আর অতিরিক্ত ওজনের করণে কী কী রোগ হতে পারে, তা নিশ্চয় কারও অজানা নেই। ঠিক মতো ঘুমলে শরীর যেমন চাঙ্গা হয়ে ওঠে, তেমনি কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও বেড়ে যায়।
শুধু তাই নয়, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমালে শরীরে নানাবিধ হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হয়, পেশির ক্ষত সেরে যায় এবং অবশ্যই নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
তাহলে এখন প্রশ্ন, কী কী নিয়ম মানলে ঘুম ঠিক মতো হবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে।

১. আগে থেকে ভেবে রাখুন
অনেক সময় কাজের টেনশানে ঘুম আসতে চায় না। তাই বড় কোনও কাজ শুরু করার আগে কীভাবে তা করবেন তার একটা প্ল্যান ছোকে নিন। এমনটা করবেন তো মানসিক চাপ অনেকটাই কমবে, সেই সঙ্গে ঘুমের ব্যাঘাত হওয়ার আশঙ্কাও কমবে। প্রসঙ্গত যাদের রাতে অফিস যেতে হয়, তারা দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। এক কথায় ঘুমটা জরুরি, কখন ঘুমাচ্ছেন তা নয়।

২. ঘুমকে ভালবাসতে শিখুন
যেমনটা আগেও বলেছি, ঘুম হল খুব স্পেশাল একটা উপহার, তাই একে ভালবাসতে শিখুন। দেখবেন অনন্দে জীবন কেটে যাবে।

৩. অফিস টাইমে মাঝে মাঝে বাইরে বের হন
দিনের বেশিরভাগ সময় অফিসের মধ্যে থাকাটা শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল না। তাই কাজ করতে করতে মাঝে মাঝে একটু বাইরে ঘুরে আসবেন। একটু হাওয়া-বাতাস গায়ে লাগলে দেখবেন শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠবে। আর একাধিক গবেষণাতেও এমনটা দেখা গেছে যে কাজের ফাঁকে একটু সূর্যালোক গায়ে লাগলে ঘুম ভাল হয়।

৪. শুতে যাওয়ার আগে মোবাইল ফোন ব্যবহার চলবে না
ঘুমতে যাওয়ার ৯০ মিনিট আগে থেকেই মোবাইলের ব্যবহার থামাতে হবে। এমনটা করবেন তো দেখবেন ঘুম আসতে কোনও সমস্যাই হবে না। আসলে এমনটা করলে শরীরে মেলাটোনিন এবং কর্টিজল হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক হয়, আর এই দুটি হরমোন যত স্বাভাবিক মাত্রায় থাকবে, তত ঘুম সুন্দরভাবে হবে।

৫. ঘুমতে যাওয়ার আগে একটু বই পড়ার অভ্যাস করুন
এমনটা করলে দেখবেন সহজে ঘুম এসে যাবে। আর যদি বই পড়তে ইচ্ছা না হয়, তাহলে স্বামী অথবা স্ত্রীর সঙ্গে একটু গল্পও করতে পারেন। দেখবেন ঘুম তাড়াতাড়ি আসবে।

৬. ঘুমের আগে কফি খাবেন না
এমনটা করলে দেখবেন ঘুম আসতে কোনও অসুবিধাই হবে না। কারণ কফিতে থাকে ক্যাফেইন, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। প্রসঙ্গত, শুতে যওয়ার বেশ কিছু সময় আগে যদি কফি খান, তাতে কোনও অসুবিধা নেই। কারণ সেক্ষেত্রে শরীর সময় পায় ক্যাফেইন বের করে দেওয়ার।

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন