নতুন মৃত্যু দূত রূপে হাজির লালপোকা

  24-10-2017 11:12AM


পিএনএস ডেস্ক: লাল রঙের ছোট্ট একটা পোকা এবং তার কামড়ের জেরে জ্বরের প্রকোপ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে দিন কয়েক আগে আলোচনা শুরু হয়েছিল। রবিবার কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে সেই পোকার কামড় নিয়েই ভর্তি এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে।

নতুন ওই আতঙ্কের নাম স্ক্রাব টাইফাস ব্যাকটিরিয়া। ডেঙ্গি যেমন এডিস মশার কামড়ে হয়, এই ব্যাকটিরিয়াটি তেমনই শরীরে ঢোকে ট্রম্বিকিউলিড মাইটস নামে এক ধরনের পোকার কামড়ে। এর জেরে প্রবল জ্বর এবং চিকিৎসা শুরু না হলে একে একে বিকল হতে পারে বিভিন্ন অঙ্গ।

বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে দিন দশেক আগে জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন গড়িয়ার বছর ষাটেকের এক প্রৌঢ়া। রক্ত পরীক্ষায় কোনও কিছুই ধরা না পড়ায় হাসপাতালের তরফে স্ক্রাব টাইফাস-এর পরীক্ষা করানো হয়। দেখা যায়, রিপোর্ট পজিটিভ। কিন্তু ততক্ষণে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ অকেজো হতে শুরু করেছে তাঁর। রবিবার তিনি মারা যান। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রমৌলি ভট্টাচার্য জানান, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে এই অসুখ প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

যেখানে ডেঙ্গির মৃত্যুহার ০.৩%, সেখানে এই রোগে মৃত্যু হয় ৭.৫ % রোগীর।

চিকিৎসকেরা জানান, যেখানে গাছপালা বেশি, সেখানেই এই পোকার অস্তিত্ব রয়েছে। এর কামড়ে প্রাথমিক ভাবে কোনও জ্বালা-যন্ত্রণা হয় না। শরীরের যে সব অংশ খুব বেশি নজরে পড়ে না, মূলত সেই সব জায়গাতেই কামড়ায়। এ থেকে জ্বর তো হয়ই, তার পর মেনিনজাইটিসও হতে পারে। লিভার, ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনও পর্যন্ত এই রোগটি নির্ণয়ের ব্যবস্থাও খুব বেশি জায়গায় নেই। সরকারি ভাবে কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং শহরের হাতে গোনা কয়েকটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে এই পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। স্বাস্থ্যকর্তারা মানছেন, এই রোগের প্রকোপ খুব বেশি ছড়িয়ে পড়লে এই মুহূর্তে রোগ নির্ণয়ের মতো পরিকাঠামো তৈরি নেই।

কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালের মেডিসিন-এর চিকিৎসক বলেন, নির্দিষ্ট একটি অ্যান্টিবায়োটিক এই রোগকে সারিয়ে তুলতে পারে। কিন্তু সমস্যা হল, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, ডাক্তারদের একটা বড় অংশই এই রোগ সম্পর্কে সচেতন নন। ফলে রোগটা বহু ক্ষেত্রে ধরাই পড়ে না। আবার বহু ক্ষেত্রে এত দেরিতে ধরা পড়ে যে চিকিৎসার সুযোগটাই পাওয়া যায় না।

পিএনএস/কামাল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন