পিএনএস ডেস্ক: আমরা খুশি হতে চাই। কিন্তু হব কীভাবে, তার উত্তর কারও কাছেই নেই। তাই তো আমরা সবাই অন্ধের মতো এদিক সেদিকে ঘুরে বেরাই এক মুহূর্ত খুশির সন্ধানে। জীবনের পরিধি কতটা, তা আমরা কেউই জানি না। তাই আর সময় নষ্ট নয়, এখন, এই মুহূর্ত থেকেই খুশি থাকার চেষ্টায় লেগে পরুন। না হলে সুযোগ হয়তো নাও পেতে পারেন। যত দিন বাঁচবেন, তত দিন যদি মনকে দুঃখের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে চান, তাহলে মেনে চলতে হবে এই নিয়মগুলি।
১. যে জিনিস খুশি দেয় না তা থেকে দূরে থাকুন: খেয়াল করে দেখুন, সারা দিনে আমরা এমন অনেক কাজ করে থাকি, যা কোনও ভাবেই আমাদের খুশি দেয় না। তবু নানা কারণে আমরা তা করে থাকি। কিন্তু এবার থেকে এমনটা করা বন্ধু করুন। সহজ কথায় যে কাজ খুশি দেয় না, সেই কাজের পিছনে সময় নষ্ট করা চলবে না। সেই সঙ্গে যে কোনও বিষয়ে সময় নষ্ট করার আগে নিজেকে একটাই প্রশ্ন করতে হবে, "এই কাজটি কি আমায় আনন্দ দেবে?"
২. দুঃখের দিনে খুশির কথা ভাবুন: বাচ্চারা যখন খুব কাঁদে তখন কী করেন? হাতে একটা লজেন্স ধরিয়ে দেন, আর এমনি কান্না হাসিতে বদলে যায়। তাই না! তেমনি মন যখনই দুঃখে থাকবে তখনই ভাল সময়ের কথা ভাববেন। দেখবেন নিমেষে মন ভাল হয়ে যাবে।
৩. মন খারাপকে এতটাই চেপে ধরুন যাতে সে পালাতে বাধ্য হয়: শুনতে হয়তে একটু আজব লাগছে। কিন্তু বিশ্বস করুন এটা দুঃখকে দূরে রাখার একটা অসাধারণ উপায়। সাইকোলজিস্টরা বলেন, যেটায় ভয় হয় সেটা থেকে পালাবেন না। বরং তার সামনাসামনি হন, তাহলে দেখবেন ভয় পালিয়ে যাবে। একইভাবে যে কারণেই মন খারাপ হোক না কেন, সেই মন খারাপের মুহূর্তটাকে ভাল করে অনুভব করুন। এমনটা করলে দেখবেন নিমেষে মন ভাল হয়ে যাবে।
৪. নিজের হাজারো প্রতিবন্ধকতাকে দূর করুন: "এই চাকরিটা পেলেই আমি খুশি হয়ে যাব।" "যেদিন এই বাড়িটা কিনতে পারবো, সেদিন আমার থেকে খুশি আর কেউ হবে না।" এমনভাবে কি আপনিও খুশির সন্ধান করে থাকেন নাকি? তাহলে আজ থেকেই এই অভ্যাস ছাড়ুন। কারণ এইভাবে নিজের সামনে স্বপ্নের গাজর ঝুলিয়ে কোনও দিনই আপনি খুশির সন্ধান পাবেন না। কারণ খুশি কোনও টার্গেট নয়, এটা একটা অনুভূতি। তাই নিজেকে টার্গেটের চক্করে বেঁধে ফেলবেন না।
৫. যে সম্পর্ক খুশি দেয় না তা থেকে বেরিয়ে আসুন: এই কথাটা বলাটা যতটা সহজ, করাটা ততটাই কঠিন। কিন্তু খুশি থাকতে গেলে যে করতেই হবে বন্ধুরা! আর যে কোনও উপায় নেই। কারণ যে সব মানুষেরা সারা দিন তাদের জীবনকে পিষে চলেছেন তাদের সঙ্গে থাকলে আপনার মনও খারাপ হয়ে যাবে। আর মন খারাপ নিয়ে বাঁচাটা যে বড়ই কঠিন। আর যদি একান্তই এমন মানুষদের সঙ্গে ছাড়া সম্ভব না হয়, তাহলে যতটা কম সময় পারবেন এমন মন খারাপ করা মানুষদের থেকে দূরে থাকবেন। কারণ ভুলে যাবেন না খুশি যেমন সংক্রমক, তেমনি দুঃখও কিন্তু!
৬. সংখ্যালঘু হয়ে বাঁচার চেষ্টা করুন: বিশেষজ্ঞদের মতে অফুরন্ত আনন্দের সন্ধান যদি পেতে চান, তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যে নিয়ম মেনে চলছেন না, সেই নিয়মকে সঙ্গী বানিয়ে জীবনকে এমন দিশা দেখাতে হবে। আর সেই নিয়মটি আর কিছুই নয়, একটা সহজ কথা। কী কথা? মানব জীবন একদিন না একদিন শেষ হবেই। তাই তো যতদিন বেঁচে আছেন ততদিন চেটেপুটে উপভোগ করুন জীবনকে।
৭.গোমড়া মুখোদের সঙ্গ ছাড়ুন: সৎ সঙ্গে থাকলে যেমন স্বর্গবাস সম্ভব হয়, তেমনি হাসিখুশি মানুষের সঙ্গে থাকলে খুশির সন্ধান পেতেও কষ্ট হয় না। আসলে খুশি থাকাটা অনেকটা সংক্রমণের মতো। তাই দেখবেন কাউকে হাসতে দেখলে আপনা থেকেই আমাদের মনও খুশি হয়ে যায়।
৮. দয়াবান হতে শিখুন: দলাই লামা বলেন, "অন্যকে ক্ষমা করতে পারলেই আনন্দের সন্ধান পাবেন।" কথাটা ঠিক। কিন্তু করাটা বাস্তবিকই খুব কঠিন। যে মানুষগুলোর জন্য আমি আজ এতটা কষ্টে আছি, তাদের ক্ষমা করা কি সম্ভব? হয়তো নয়। কিন্তু করতে যে হবে বন্ধরা। কারণ মনে বিষের পরিমাণ বাড়লে যে খুশির পরিমাণ কমে যায়।
৯. "না" বলাটা খুব জরুরি: ছোট থেকে আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো এই কথাটা শুনে আসছেন। কিন্তু করতে পারছেন কজন বলুন। আমরা প্রায় সবাই আমাদের আশেপাশের লোকেদের খুশি করতে গিয়ে নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে এমন অনেক কাজ করে থাকি, যা হয়তে বাকিদের আনন্দ দেয়, কিন্তু দিনের শেষে আমরা নিজেরাই অখুশি হয়ে পরি। যেমন ধরুন, আমাদের মাঝে মধ্যেই সামাজিকতার খাতিরে এমন আত্মীয়ের বাড়ি যেতে হয় যারা আমদের পছন্দ করেন না। তবু তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে হয়। এতে পরিবারের বাকিরা খুশি হয় ঠিকই। কিন্তু আমাদের মনের খোঁজ কি কেউ রাখে? তাই না বলতে শিখুন। সহজ কথায়, যেখানে খুশি নেই সেখানে যেতে নেই।
১০. খুশি থাকার অভ্যাস করাটা জরুরি: মানে! ঠিক বুঝলাম না। একেবারেই ঠিক শুনেছেন। খুশি থাকতে গেলে তার অনুশীলন করতে হবে। আর এই কাজটা করবেন কীভাবে? খুব সহজ! অর্থবান লোকেরা যেমন সব সময় টাকার কথা বলেন। স্বাস্থ্যবান যেমন শরীরের, তেমনি খুশি মনের মানুষের সব সময় এমন কথা বলেন যাতে বাকি সবাই খুশি হন।
পিএনএস/আলআমীন
খুশি থাকার সহজ টিপস!
17-03-2018 09:14AM