পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : অনেক আগে একটা পালা গান শুনেছিলাম। গানের নাম পাগলা ঘোড়া।। গানটি এমন ‘ও আমার পাগলা ঘোড়া রে কইর মানুষ কই লইয়া যায়!’ আমেরিকান আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তেমনই মনে হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে তাকে হিলারির ভাড়াটে নির্বাচনী প্রচারক মনে হয়।
এমন প্রার্থী শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকলে ডেমোক্রেটদের পোয়া বারো হবে সহজেই। ছলে-বলে-কৌশলে হিলারিকে জিতিয়ে দেয়ার অন্যতম হাতিয়ার ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এভাবেই মাঠে রাখা চাই। তার প্রতিটি কথা, বক্তব্য ও মন্তব্য টনিকের মতো কাজ দিচ্ছে হিলারির। প্রচার-প্রচারণা বাদ দিয়ে কেবল টাম্পকে তার চলমান মারদাঙ্গা অবস্থান ও চটুল বাক্যবাণ অব্যাহত রাখার কৌশলটা বেগবান রাখতে হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বালখেল্যসুলভ আচরণ ও কথায় ইতিমধ্যে তার দলের বাঘা বাঘা নেতারা সরে গেছেন। আদতে আমেরিনকারা তো তা-ই। এই পদের অধিকারী অনেকের পাগলামো ইতিমধ্যে বিশ্ববাসীর সামনে স্পষ্ট হয়েছে। ইরাকে তাদের বদ্ধপাগলামী লক্ষ করা গেছে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে মুসলিম দেশগুলোয়। অস্ত্র বিক্রিতে সেটা বেশি মাত্রা পায়। টাম্পের ভারসাম্যহীন চরিত্র যেখানে ষোলো আনা ফুটে ওঠে। আদতে ওরা এমনই।
প্রলাপ করতে গিয়ে ট্রাম্প কিছু সত্য বলছেন বটে! এমনকি জিতলে হিলারিকে জেল খাটানোর কথাও বলেছেন। এক্ষেত্রে যুক্তিও আছে বটে। তবে নির্বাচানে দাঁড়িয়ে এসব বলা যে আত্মহননের শামিল, এটা কে বোঝাবে ওই উন্মাদকে। ট্রাম্প যতই মুখ খুলছেন ততই হিলারির ভোট গাণিতিক হারে বাড়ছে। বিশ্লেষকদের মতে, হিলারির বিজয়কে নিশ্চিত করার জন্য যা যা করণীয়, ট্রাম্প ইতিমধ্যে তার সবই করে ফেলেছেন।
নির্বাচনে দাঁড়িয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী ও সমর্থকদের যে কাজটি করতে নেই, সে কাজগুলো বেশ ভালোই করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যা-ই বলছেন, সেটা তার নিজের জন্য সাপেবর হচ্ছে আর ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনেরর জন্য হচ্ছে সোনায় সোহাগা। বিষয়টি হালে রিপাবলিকানদের ভাবিয়ে তুলেছে। কৌশলে খেলিয়ে খেলিয়ে হিলারি এমন জায়গায় ট্রাম্পকে নিয়ে এসেছেন যে, এখন চাইলেও প্রার্থী বদলানো যাবে না।
বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ বাঁধানো আর অস্ত্র বিক্রির বিষয়টি বেরিয়ে আসছে ট্রাম্পের মুখ থেকে। মুসলিম বিদ্বেষের বিষয়টিও বাদ যায়নি। টাম্পের মুসলিম বিদ্বেষের বিষয়টি এতই মার্কেট পায় যে, সম্প্রতি কজন সম বয়সী শিশু মিলে এক মুসলমান শিশুর উপর চড়াও হয়। ঘটনাটি মিডিয়ায়ও আসে। ভিন্ন ধর্মের প্রতি টাম্পের আক্রোশ থেকে শিশুরাও যে মুক্ত নয়; বরং অপরিণত বয়সে তারা কেউ আক্রমণ করছে কেউ আক্রান্ত হচ্ছে।
নানাভাবে নিজেকে অপরিণামদর্শী হিসেবে চিত্রিত করতে ট্রাম্পের জুড়ি নেই। তিনি রাজনীতিতে নেমেছেন, অথচ নিজেই বলছেন রাজনীতি পছন্দ করেন না। ব্যবসা করেছেন, সেখানে সফল হননি; বরং বাঁকাপথ অনুসরকারী ও সুযোগসন্ধানী হিসেবে তিনি কুখ্যাতি পেয়েছেন। নারী বিদ্বেষী হিসেবে ইতিমধ্যে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে শতভাগ সফল হয়েছেন বললে কমই বলা হবে।
আমেরিকা কী, কিছুটা রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো নিজের অজান্তেই বলে ফেলেছেন। মুসলমানদের তারা কীভাবে কোন চোখে দেখে আর সাপের গালে ব্যাঙের গালে আমেরিকারা নির্লজ্জভাবে সমানে চুমু খেতে পারে সেটা বুঝতে কারো জজ-ব্যারিস্টার হওয়ার দরকার নেই। ধর্ম ও বর্ণবিদ্বেষী ট্রাম্প হেরে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে এবং প্রত্যাশিত সমর্থন না পেয়ে পরাজয় টের পেয়ে হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসী আমেরিকার ভেতরের অপ্রকাশিত কিছু নোংরামি সম্পর্কে ধারণা পেল।
লেখক : সাধারণ সম্পাদক- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
ই-মেইল : jalam_prodhan72@yahoo.com
পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল
ট্রাম্পের পাগলা ঘোড়া!
