পিএনএস ডেস্ক: সৌদি আরব থেকে প্রতি বছর ৮৬ হাজার বিদেশি গৃহকর্মী কাজ ছেড়ে পালাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে শেষমেষ মাথা ঘামানো শুরু করেছে প্রশাসন। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এখন এর সুরাহা পেতে চায় সরকার।
শনিবার (২২ অক্টোবর) আরব নিউজের এক খবরে বলা হয়েছে, সৌদি প্রশাসন বিদেশ থেকে আসা এসব গৃহকর্মীর ব্যাপারে ব্যাখ্যা খুঁজতে তদন্তে নেমেছে। এ নিয়ে কমিটি গঠিত হচ্ছে।
মজলিসের শুরার সদস্যরা বলছেন, এটা এখন সৌদি আরবের অন্যতম মাথাব্যথা হয়ে গেছে। কারণ, গৃহকর্মীদের এই পলায়ন প্রবণতা স্থানীয় অর্থনীতি ও নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
আবদুল্লাহ আল ওতাইবি নামের একজন এ সমস্যা সমাধানে রিক্রুটমেন্ট নথিপত্র পর্যালোচনা এবং সমস্যা সমাধানে কি কি সুপারিশ দেওয়া যেতে পারে- সে বিষয়ে জানতে বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন।
খবরে বলা হয়, গৃহকর্মীদের ঠিকমতো বেতন না দেওয়া, খেতে না দেওয়া এবং পুরুষের নির্যাতন ইত্যাদি কারণে আজ সৌদি আরবের এই দশা। মালিকদের ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে শ্রমিকরা। বিশেষ করে নারীরা।
দেশটিতে প্রায় ২৬ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছে; যাদের বড় একটি অংশ ঘরের কাজ করে। সম্প্রতি দেশটির সরকার বাংলাদেশ থেকে ৫ লাখ নারী গৃহকর্মী নেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছে।
টাঙ্গাইলের বাসিন্দা তাবাচ্ছুম তৃপ্তি বলেন, আমাদের পাশের বাসার এক মধ্যবয়সী নারী কয়েক বছর আগে সৌদি যান। তিনি সেখানে এক বাড়িতে রান্না-বান্নার কাজ করেন। সেই সঙ্গে বাড়ির বাচ্চাদের দেখাশোনা করেন। কিন্তু বাড়িওয়ালার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর সেই সুযোগে বাড়িওয়ালা তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এরপরই ওই নারী সৌদি ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন।
এদিকে দিন দিন সৌদি আরবের গৃহকর্মীদের এ শূন্যতার জন্য মজলিসে শূরা শ্রম মন্ত্রণালয়কে দূষছে। বলা হচ্ছে, গৃহকর্মীদের বিষয়টি শ্রম মন্ত্রণালয়ের ওপর বর্তায়। এটা তাদের ব্যর্থতা। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদিত ‘কর্মসংস্থান কৌশল’ বাস্তবায়নও তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
এ ঘটনার জন্য সৌদিদের দায়ি করছেন ফাত্তাহ আবু মুরিফাহ নামের একজন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, গৃহকর্মীদের পালানোর যে সমস্যা সৌদি আরবের উত্তরোত্তর বাড়ছে, তা কমাতে হলে বা সমাধান করতে হলে গৃহকর্মীদের ওপর মালিকদের অসৎ আচরণ বন্ধ করতে হবে।
পিএনএস/আলআমীন
সৌদি ছেড়ে নারী কর্মীরা কেন পালাচ্ছে?
23-10-2016 02:42PM