রাশিয়া সীমান্তে ব্রিটিশ সৈন্য, ট্যাঙ্ক, জঙ্গি বিমান

  27-10-2016 11:21PM

পিএনএস: আমাদের এই শান্তিপূর্ণ পৃথিবীতে এখন আর শান্তির সুবাতাস বইছে না। এর বদলে শোনা যাচ্ছে বিরোধপূর্ণ কথাবার্তা।

মাঝে মাঝে যুদ্ধংদেহী হুংকার। রুশ সীমান্তে ব্রিটেন পাঠিয়েছে সৈন্য, ট্যাঙ্ক, ড্রোন। রণ সজ্জায় সজ্জিত হচ্ছে তারা। রাশিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ লিথুয়ানিয়াও রণসজ্জায় সজ্জিত হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটি কিনেছে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। যুদ্ধের দামামা বাজছে ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশেও।

রাশিয়ার হামলার আশঙ্কায় ব্রিটেন রুশ সীমান্তে সৈন্য মোতায়েন করছে। স্নায়ুযুদ্ধের পর এতো সৈন্য দেশটি আর কখনো মোতায়েন করেনি। রাশিয়ার উত্থান মোকাবিলায় দেশটির শত শত সৈন্য, ট্যাঙ্ক, জঙ্গি বিমান, ড্রোনসহ নানা ধরনের সমরাস্ত্র রাশিয়ার পূর্ব সীমান্তে পাঠানোর কথা বুধবার নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বাল্টিক সাগরীয় দেশগুলোয় আগ্রাসন চালাতে পারে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পশ্চিম দুনিয়ার দেশগুলোয় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। এরই পেক্ষপটে সৈন্য ও সমরাস্ত্র পাঠানো হচ্ছে। ১৯৯০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর বাল্টিক সাগরীয় দেশগুলো রাশিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল তরে নেয়ার পর এস্টোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করে তুলেছে বা এখনো তুলছে। ন্যাটোকেও অনুরোধ করেছে তাদের পাশে এসে দাঁড়াতে। ব্রাসেলসে ন্যাটো সদরদপ্তরে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালোন শুক্রবার বলেন, ব্রিটেন ৮০০ সৈন্য, ট্যাঙ্ক, জঙ্গি বিমান, ড্রোন এস্টোনিয়ায় পাঠানো হচ্ছে।

নর্থ-সি আভিমুখে একটি রুশ রণতরীসহ আটটি যুদ্ধজাহাজ রওয়ানা দেওয়ার পর এই সমরাস্ত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডোভার প্রণালি অতিক্রম করে এগুলোর সিরিয়া উপকূলে যাওয়ার কথা।

ফ্যালোন বলেন, এস্টোনিয়ায় অগ্রবর্তী বাহিনীর সৈন্য মোতায়েন আগামী বছরের প্রথম দিকে শেষ হবে। এ ছাড়া হাল্কা সাঁজোয়া যান ও চ্যালেঞ্জার-২ ট্যাঙ্কসহ একটি পূর্ণাঙ্গ ব্রিটিশ ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হবে আগামী বছরের প্রথমদিকে। এর সমর্থনে মোতায়েন করা হবে একটি ফরাসি ও ডেনমার্কের এক কোম্পানি সৈন্য। এই সৈন্য মোতায়েনের কাজ শুরু হবে আগামী বসন্তে (মে মাস)।

তিনি বলেন, এই সৈন্য মোতায়েনের মধ্যদিয়ে ন্যাটোতে ব্রিটেনের উপস্থিতি জোরদার করে তোলা হয়। তিনি আরো কলেন, ‘যদিও আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করেছি ন্যাটোর পূর্ব ও দক্ষিণের দেশগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করে তুলেতে যে ব্রিটেনের ইচ্ছার অভাব নেই তা দেখানো।

তিনি জানান, রাজকীয় বিমান বাহিনীর জঙ্গি বিমানগুলো আগামী বছর কৃষ্ণ সাগরীয় এলাকা থেকে রোমানিয়া বিমান ঘাটি পর্যন্ত আকাশে টহল দিবে।

ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য সদস্য দেশ বাল্টিক সাগরীয় দেশ ছাড়াও পূর্ব ইউরোপীয় দেশে সৈন্য পাঠাবে বলে তিনি জানান।

কানাডা লাটভিয়ায় সৈন্য পাঠবে। জার্মানি মোতায়েন করবে লিথুয়ানিয়ায়।

যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য মোতায়েন করবে পোল্যান্ডে। সেখানে মোতায়েন করা হবে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। পেসিডেন্ট পুতিনের বিশ্বাস এই ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তার পারমাণবিক সমরাস্ত্র ধ্বংস করা হবে। এ বছরের প্রথমদিকে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যুহ ধ্বংস করে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তিনি।

তিন সপ্তাহ আগে রাশিয়া পারমাণবিক ওয়্যারহেড বহনে সক্ষম ইস্কান্দার এম ক্ষেপণাস্ত্র পোল্যান্ডের সীমান্ত সংলগ্ন ক্যালিনগ্রাদ (ছিটমহল) নিয়ে যান। সম্প্রতি লিথুয়ানিয়া ক্ষেপণাস্ত্র কিনছে। এর মধ্যে জ্যাভলিন মধ্যম পাল্লার ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। দেশটিতে সামরিক বাহিনীতে কাজ করেছে, কিন্তু অবসর জীবনযাপন করছেন যেসব সৈন্য তাদের আবার ডেকে পাঠানো হয়েছে।
জার্মানিও অবসরপ্রাপ্ত সৈন্যদের ডেকে পাঠিয়েছে। এতে রাশিয়া ও পশ্চিম দুনিয়ার মধ্য যুদ্ধের সম্ভাবনা বেড়ে গেছে।

তিনশ মার্কিন মেরিন সেনা নরওয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছে গতকাল বুধবার। ফলে যুদ্ধের সম্ভাবনা আরো কিছুটা বেড়ে গেছে।



পিএনএস/বাকিবিল্লাহ্

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন