যে কারণে অধিক সংখ্যায় ইসলামে ধর্মান্তরিত হচ্ছেন পশ্চিমারা

  28-10-2016 01:19PM



পিএনএস ডেস্ক: এটা সত্য যে, পাশ্চাত্যে ইসলামের অনুসারীর সংখ্যা দ্রুত গতিতে বেড়েই চলেছে। কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই মুসলমানদের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। ১৯০০ সালে যেখানে মুসলমানের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০,০০০ জন সেখানে ১৯৯১ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ মিলিয়নে। (কয়েকটি জড়িপ মতে এ সংখ্যা ৪.৫ মিলিয়ন)।

ধর্মান্তর ছাড়াও সাম্প্রতিকতম এই বৃদ্ধির আরো একটি কারণ হচ্ছে ইমিগ্রেশন ও মুসলমানদের উচ্চ জন্মহার। তবে, এখনো আমেরিকায় ইসলামে দীক্ষিতদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। বর্তমনে যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত আমেরিকান জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ।

কর্তৃপক্ষের মতে এসব আফ্রিকান বংশোদ্ভূতদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশই হচ্ছে মুসলমান। কিন্তু সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় অ্যাংলো খ্রিস্টানরাও ইসলামে ধর্মান্তরিত হচ্ছে এবং তাদের মধ্যে অনেকেই উচ্চ শিক্ষিত।

এত সংখ্যক মানুষ ইসলামে ধর্মান্তরিত হচ্ছে তার পিছনে আসলে কোন জিনিসটি তাদের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে? ‘খ্রিস্টানিটি টুডে’ নামে একটি প্রবন্ধের (আগস্ট ২০, ১৯৯০) রিপোর্টে ইসলামে ধর্মান্তর হওয়ার পিছনে ৫টি প্রধান কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো-ইসলামের মতবাদ সহজ এবং যৌক্তিক, সকল বিশ্বাসীদের সমান বলে গণ্য করা, ইসলাম একটা ‘প্রয়োগিক’ বা ‘কার্যকরী’ ধর্ম এবং অধিকসংখ্যক পুরোহিতত্ত্বের অভাব।

কিন্তু ওই কারণগুলো নিছক যুক্তিতর্ক যা ইসলামের সমর্থনকারীরা ইসলাম প্রচারে তোতাপাখির মতো ব্যবহার করে থাকে। এই যুক্তিগুলো ধর্মান্তরের ব্যাপারে কিছুটা প্রভাব হয়ত ফেলে কিন্তু আমেরিকানদের মুসলিম হওয়ার জন্য এই যুক্তি প্রকৃত অনুপ্রেরণাদায়ক নয়।

কেন আফ্রিকান-আমেরিকানরা ইসলামের দিকে ঝুঁকছে? এমন প্রশ্নে একজন আমেরিকান মুসলিম এ সম্পর্কে কয়েকটি কারণের কথা উল্লেখ করেছেন। তার তালিকায় থাকা প্রথম কারণ হচ্ছে, চার্চের বর্ণবাদ প্রথা।

তিনি বলেন, ‘বৈষম্য যা আমরা মনে করি ইসলাম আমাদেরকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে কারণ নিজস্ব সংস্কৃতি প্রত্যাখ্যান করার এটা একটি উপায় যা ইসলামে নেই। সমাজতাত্ত্বিক নিরিখে আমি মনে করি, খ্রিস্ট ধর্ম ত্যাগ করে অনেক আফ্রিকান-আমেরিকানদের ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার অন্যতম কারণ এটি।’

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, অ্যাংলো-আমেরিকানদের ধর্মান্তরও গুরুত্বপূর্ণ। আরেকটি ফ্যাক্টর যা আমাকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করে আর তা হলো নির্দেশনা এবং সুশৃঙ্ক্ষলা।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজ বিশেষত শহরে শৃঙ্ক্ষলার অভাবে সংহতি নষ্ট করে দিচ্ছে। ইসলামের সুশৃঙ্ক্ষল জীবন-শৈলীর মাধ্যমে অনেক মানুষ ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘তৃতীয় ফ্যাক্টর যা সম্ভবত কেউ কখনো সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেনি। আর সুস্পষ্ট কারণেই আমি মনে করি তা গুরুত্বপূর্ণ। এটা সত্য যে, ইসলামের পথে আসার জন্য অন্য ধর্মের মানুষকে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং এটা একটা সুযোগ যাতে কারো পাপ স্বীকার করা ছাড়াই নিজের জীবনকে সুশৃঙ্ক্ষল করতে পারে এবং পাপ থেকে পরিত্রাণের প্রয়োজনে তাদের পুরোহিতের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।’

‘বস্তুত, ইসলাম মানুষকে বলে তাদের পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য পুরোহিতের কাছে যেতে হবে না। এজন্য প্রয়োজন কেবল আল্লাহর আইনের ‘নির্দেশিকা’ অনুসরণ করা এবং একমাত্র এটার যথাযথ অনুশীলনই তাদেরকে স্বর্গে যেতে সহায়তা করবে।’ সিবিএন ডটকম অবলম্বনে

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন