দাঁড়িপাল্লা দিয়ে টাকা মাপছে দোকানদাররা!

  30-11-2016 11:55AM

পিএনএস ডেস্ক: ভেনিজুয়েলায় মুদ্রাস্ফীতি চরম আকার ধারণ করায় দোকানদাররা টাকা গুনতে গুনতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন। এজন্য ক্রেতাদের টাকা দিতে দাঁড়িপাল্লা দিয়ে তা মাপা শুরু করেছেন তারা। গত এপ্রিলে আএমএফ জানায়, ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশটির মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১৬৪০% বেড়ে যাবে। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৭২০% ভাগ।

সমাজতান্ত্রিক দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক দুরাবস্থা চলছে। সম্প্রতি তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় অর্থনীতিতে বড় ধস নেমেছে। সেটি সামাল দিতে নতুন টাকা বাজারে ছাড়ছে সরকার।

অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হলে রাস্তায় আন্দোলন করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ গুলি করে তার ছত্রভঙ্গ করেন। ছবিটি ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে তোলা

মুদ্রাস্ফীতি এত চরম আকার ধারণ করেছে, সামান্য একটি পন্য কিনতে বাজারে নিয়ে যেতে হচ্ছে ব্যাগ ভর্তি টাকা। দীর্ঘ সময় ধরে এ টাকা গণনা করতে বিরক্ত হচ্ছেন দোকানদারা। তাই তারা টাকার মোটা মোটা বাণ্ডিলগুলো দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মাপছেন টাকা।

দেশটির অর্থনীতি ধাক্কা খাওয়া শুরু করে ২০১৪ সাল থেকে। তখন তেলের দাম কমে গেলে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়ে। এদিকে বাড়তে শুরু করে দ্রব্যমূল্য। এরপর লাগাম ধরার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি। ২০১৪ থেকে ২০১৫ এবং ২০১৬ সাল নাগাদ মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকে। এখন পর্যন্ত ভেনিজুয়েলা সরকার নাগাল ধরতে সক্ষম হয়নি।

এ বিষয়ে জেসাস কাসিক নামের এক কলসাল্টিং ফার্মের পরিচালক বলেন, ‘দাঁড়িপাল্লায় টাকা মাপার বিষয়টি খুবই দুঃজনক। এটি সব এলাকায় দেখা যায়নি। হয়তো কিছু এলাকায় এমনটা হচ্ছে। তারপরও আমাদের অর্থনীতির জন্য এটি খুবই ভয়াবহ। তারা যখন দাঁড়িপাল্লায় টাকা মাপা শুরু করেছেন তখন সহজেই অনুমান করা যায় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কোন দিকে যাচ্ছে।’

মাম্বারতো গঞ্জালাজ নামের এক মুদি দোকানদার বলেন, ‘আমি পনির মাপতে যে স্কেল ব্যবহার করি, টাকা মাপতেও একই স্কেল ব্যবহার করি। এটা খুবই দুঃজনক। দিন দিন যে হারে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে তাতে মনে হয় পনিরের দাম আরও বাড়বে।’

ব্রিমার রদ্রিগেজ একজন মুদি দোকানদার। তার ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে একটি দোকান আছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন আমার দোকানে কয়েকশো হাজার নোট সংগ্রহ হয়। সেগুলো আমি ব্যাংকে রাখার জন্য অফিসে জমা করি। কেউ যদি আমার অফিস চেক করে তাহলে হয়তো আমাকে ড্রাগ ডিলার মনে করবে। কারণ আমার অফিসে প্রতিদিন বাণ্ডিল বাণ্ডিল টাকা জড়ো হচ্ছে।’

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন